Friday, December 9, 2016

ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন যেসব দেশে , ভুলবার নয় ভিয়েতনাম ,ভ্রমনে সুস্থ থাকতে করণীয়, হিটলার, একজন অমুসলিম।

যারা বাংলাদেশে কিডনী সমস্যায় ভোগেন ইনসাফ বারাকা হাসপাতালে প্রফেসর এহতেশাম স্যারকে দেখাতে পারেন। কম খরচে খুবই ভালো সেবা পেয়েছি। আমার বাবার ক্রিয়েটিনিন ২ থেকে এক সপ্তাহে ৮ হয়ে ইমার্জেন্সি হয়ে গেছিল। স্কয়ারে মোসাদ্দেক আহমেদ স্যার ডায়ালাইসিস করাতে বলছিল। এহতেশাম স্যার ইমার্জেন্সি টা হ্যান্ডেল করেছেন ভালো ভাবে, ডায়ালাইসিস দেননি। কমে এসেছে ক্রিয়েটিনিন। ২-৩ এ। আলহামদুলিল্লাহ। বাট প্রেশার বেশি থাকে, সেটার জন্য ট্রিটমেন্ট নিচ্ছি। জানিয়ে রাখলাম কেউ উপকার পেতে পারি। বাট ওনার সিরিয়াল পেতে ২ সপ্তাহ লাগে আউটডোরে। ইমার্জেন্সিতে এডমিট হলে ওইদিনই দেখবে।



_____________________________________________________________
বার্লিন থেকে বাংলাদেশ
আবু এন এম ওয়াহিদ
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭,শুক্রবার, ১৯:৫০ | আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭,শুক্রবার, ২০:২৭

বার্লিনের টিগেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে হোটেলে যাচ্ছি। এয়ারপোর্ট এলাকা ছাড়িয়েই ট্যাক্সি ড্রাইভার যে রাস্তায় মোড় নিলো সেটা বড়ই সুন্দর। সোজা রাস্তার ডান দিকে সমান্তরালভাবে চলে গেছে নদী, বাঁ দিকে বিশাল ঘন বন। নদীতে বুনোহাঁস নির্ভয়ে সাঁতার কাটছে, আনন্দে জলকেলি খেলছে। আইনের শাসন কড়া বলে এখানে পাখিশিকারিরা কাছেও ভিড়তে পারে না। শীতকাল, তাই বনের করুণ সুর কান পাতলে শোনা যায়। কিছু কিছু চিরসবুজ গাছ ছাড়া, গাছে গাছে পাতা নেই, যাও বা আছে মরা পাতা। একটু বাতাস লাগলেই ঝরে পড়ে যাচ্ছে। ঝরা পাতা, পাতাবিহীন গাছ আর ডাল থেকে ডালে অস্থির কাঠবিড়ালির লাফালাফিরও যে একটা রূপ আছে, তা জীবনে প্রথমবারের মতো উপলব্ধি করলাম। সব মিলে কী অপূর্ব বার্লিনের এ খণ্ডচিত্র!
ড্রাইভারের সাথে কথা বলে জানলাম, যাকে নদী বলছি সেটা আসলে নদী নয়, একটি কৃত্রিম খাল আর যাকে বন বলছি সেটা সিটি পার্ক। বিদেশের মাটিতে যখন যেখানে যাই, আমার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের সাথে মনে মনে একটা তুলনা করে নিই। এবারো সে কাজে ভুল হলো না। ভাবলাম, বার্লিনবাসী কী ভাগ্যবান! শহরের ভেতরে এত বড় সবুজের সমারোহ! কী সুন্দর জলাধার, পরিষ্কার পানি! এমন পার্ক যদি ঢাকায়ও একটা থাকত, ঢাকার খালগুলোয় যদি স্বাভাবিক পানির প্রবাহ থাকত, কতই না ভালো হতো!
এসব না থাকলেও ঢাকাবাসীর নসিব খারাপই বা বলি কী করে? এত বড় শহর, চার দিক নদীবেষ্টিত হয়েই তো আছে। শহরে এবং তার আশপাশে রয়েছে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু। ধলেশ্বরীও খুব দূরে নয়। বার্লিন যেখানে খাল খনন করে নদীর অভাব ঘোচাচ্ছে, নগরের শোভা বর্ধন করছে, সেখানে ঢাকার মানুষ খালনালা সব ভরাট করে রাস্তা বানাচ্ছে, ইটের ওপর ইট গেঁথে দালান তুলছে। দখল ও দূষণে নদীগুলোকে গলা টিপে টিপে মেরেই চলেছে। মহা আহাম্মক না হলে কি মানুষ কখনো এমন আত্মঘাতী কাজ করতে পারে? আফসোস, এ বোধোদয় আমাদের মানুষ, সমাজ ও রাষ্ট্রের কবে হবে?
হোটেলে গিয়ে দেখি, জায়গাটা একটু নীরব নিরিবিলি আবাসিক এলাকা। চার দিকে বড় বড় গাছ। দোকানপাট ব্যবসায় বাণিজ্য এখানে চলে না। দিনদুপুরে ফুটপাথে মানুষের চলাচল নেই বললেই চলে, রাস্তায় গাড়িও কম। আছে শুধু বড় বড় অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং। ফ্রন্ট ডেস্কে জিজ্ঞেস করলাম, আমার একটু দোকানে যাওয়া দরকার, ধারেকাছে কি কিছু আছে? কিভাবে যাবো? আমাকে বলে দিলো, ‘ডান দিকে যাও, আধমাইল হাঁটলে পরে পাবে।’
আধমাইল যাওয়ার পর হাতের ডান দিকে পেলাম লাল ইটের বিশাল এবং অতি পুরনো এক ছয়তলা বিল্ডিং। এত বড় বিল্ডিং খুব কমই দেখেছি। বিল্ডিংটি কিসের, জানতে খুব আগ্রহ হলো। কাছে গিয়ে দেখলাম, সামনের দেয়ালে মাটি থেকে মাত্র তিন-চার ফুট উঁচুতে লেখার মাঝে একটা পরিচিত শব্দ ‘Seimens’। তার সাথেই একটা সাবওয়ে স্টেশন। এর ঠিক পরেই চার লেনের চওড়া ব্যস্ত রাস্তা। রাস্তার ওপারে দেখলাম ‘Seimens’-এর একই রকম আরেকটি বিল্ডিং। তারপর একটি গ্রোসারি দোকানের খোঁজে বড় রাস্তা ধরে বাঁ দিকে হাঁটতে থাকি। দুই পা ফেলতেই দেখি ওপার থেকে এক যুবক ব্যস্ত রাস্তা পার হয়ে আমার দিকে দ্রুত ছুটে আসছে। ফুটপাথে উঠেই সালাম করে সামনে এসে দাঁড়াল।
আমি ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলাম, একটু ভয়ও পেলাম! কী করে সে বুঝল যে, আমি মুসলমান? এত মানুষ বাদ দিয়ে কেন আমাকেই বা নিশানা করল। আমি ইংরেজিতে কথা বলি, সে তার ভাষা বলে, কোন ভাষা তা-ও জানি না। তার কথা আমি বুঝি না, না আমার কথা সে বোঝে। তার মুখের শুধু একটা শব্দই আমার কাছে অর্থবহ মনে হলো- ‘পোল্যান্ড’, অর্থাৎ সে পোল্যান্ড থেকে এসেছে। মানুষের মুখের ভাষা আল্লাহর অসাধারণ সৃষ্টি, অপূর্ব নেয়ামত, কিন্তু তিনি মানুষের মাথায় যে মগজ দিয়েছেন সেটা ভাষার চেয়েও শক্তিশালী। এবার নতুন করে অনুধাবন করলাম, বাকশক্তি যেখানে অচল, মানুষের বুদ্ধি সেখানেও সচল। লোকটি তার পেট, মুখ ও হাত ব্যবহার করে আকারে ইঙ্গিতে আমাকে বুঝিয়ে দিলো যে, তার সন্তানসম্ভবা স্ত্রী ঘরে উপোস করছে, সে সাহায্য চায়। পকেট থেকে এক ইউরো বের করে তার হাতে তুলে দিয়ে সামনে হাঁটতে থাকলাম। রাস্তার ওপারে দেখতে পেলাম Seimens-এর আরেকটা বড় বিল্ডিং, কিন্তু এটা নতুন। আরো দুই ব্লক সামনে গিয়ে দেখি এক সাবওয়ে স্টেশন- নাম Seimensdahmm। অনুমান করলাম, আমি Seimens-এর জগতে প্রবেশ করেছি। স্টেশনের কাছেই এক দোকানে কাজ সেরে হোটেলে ফিরে এলাম।
ফ্রন্ট ডেস্কে জানতে চাইলাম, তোমাদের চার দিকে Seimens-এর এত স্থাপনা! ব্যাপার কী? আমাকে বলল, ‘তুমি যে জায়গায় আছো, এটার নামই ‘Seimens City’। Seimens-এর প্রতিষ্ঠাতা এখানেই থাকতেন। কোম্পানির দু’টো হেড অফিস- একটি এখানে, আরেকটি মিউনিখে। দিনটি ছিল ২০১৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর। লবিতে বসেই কম্পিউটারে লগইন করে পড়তে লাগলাম Seimens-এর কথা। দেখলাম, ঠিক দুই শ’ বছর আগে অর্থাৎ ১৮১৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর Seimens কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা মালিক Werner von Seimens-এর জন্ম। ১৮৪৮ সালে তিনি এখান থেকেই শুরু করেন তার এ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। আজ এটি পৃথিবীর সবচেয়ে মর্যাদাশালী কোম্পানিগুলোর অন্যতম। উইকিপিডিয়া থেকে নতুন যে কথা শিখলাম সেটা হলো, ‘Seimens’ শব্দটির উচ্চারণ ‘সিমেন্স’ নয়, জার্মান ভাষায় এর সঠিক উচ্চারণ ‘জিমেন্স’।
পরদিন সকালে আমার বার্লিন দেখতে যাওয়ার কথা। ফ্রন্ট ডেস্ক থেকে সব বুঝে নিলাম, কোথায় যাবো, কিভাবে যাবো এবং সেখান থেকে কেমন করে ট্যুর বাসে উঠব। সকাল বেলা দেখলাম আবহাওয়া ভালো নয়, ঠাণ্ডাও খুব বেশি। ভালো করে গরম কাপড়চোপড় পরে হাতব্যাগে পানি, কিছু শুকনো খাবার ও ছাতা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। প্রথম Seimens বিল্ডিংয়ের কাছে সাবওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখিÑমানুষজন নেই বললেই চলে। কারণ শীতের সকাল, তা-ও আবার রোববার। আমি জার্মান ভাষা জানি না। মেশিন থেকে টিকিট কিনতে হবে। নির্দেশনা সব জার্মান ভাষায়, তাই এক বৃদ্ধার সহায়তায় টিকিট কিনে সাবওয়েতে উঠলাম।
এর মধ্যে যে বিষয়টি আমাকে অবাক করল সেটা হলো, সাবওয়ে স্টেশনে ওঠানামার ব্যাপারে কার টিকিট আছে আর কার নেই, সেটা দেখভালের জন্য কোনো মানুষও নেই, কোনো যান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাও নেই! পরে জানতে পারলাম, বার্লিনবাসীর নাগরিকজ্ঞান এবং নৈতিক মূল্যবোধ এতটাই উঁচুমানের যে, তারা সাধারণত টিকিটের ব্যাপারে ফাঁকি দেয় না, তবে কদাচিৎ যে এর ব্যত্যয় হয় না, তা-ও নয়। তাই মাঝে মধ্যে পরিদর্শকেরা ট্রেনে টিকিট চেক করে। বিনা টিকিটে কাউকে ধরতে পারলে ওয়ার্নিং দেয়, জরিমানা করে। এটা সত্যি অবাক হওয়ার মতো অভিজ্ঞতা। কারণ এমন উন্মুক্ত ব্যবস্থা আমি টোকিওতে দেখিনি, লন্ডনে দেখিনি, প্যারিসে দেখিনি, রোমে দেখিনি, নিউ ইয়র্কে দেখিনি, ওয়াশিংটন ডিসিতেও দেখিনি! অনেক দিন আগের টরেন্টো ও মন্ট্রিয়েলের অভিজ্ঞতার কথা ভুলে গেছি, তবে শুনেছি সিডনির সাবওয়েব্যবস্থা নাকি বার্লিনের মতোই।
আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রেন থেকে নেমে ওপরে যখন রাস্তায় উঠে এলাম, বুঝতে পারলাম হোটেলের ফ্্রন্ট ডেস্ক আমাকে ভুল নির্দেশনা দিয়েছে। ট্যুর বাস ধরার জন্য আমি সঠিক জায়গায় আসিনি। জায়গাটা প্রধানত আবাসিক। রাস্তার দুই ধারে সব বড় বড় অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং, নিচতলায় দোকানপাট; কিন্তু রোববারের শীতের সকাল বলে ব্যবসায় বাণিজ্য সব বন্ধ। লোক চলাচল নেই, একা মানুষ, পকেটে পাঁচ-ছয় শ’ ডলার আছে বলে একটু ভয়ও হচ্ছে! কী করব, কোথায় যাবো, কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। দিশেহারা হয়ে কিছু দূর হাঁটার পর দেখলাম এক হেয়ার ড্রেসারের দোকান খোলা। কিন্তু দোকানের দরজায় একটা বিরাট কুকুর দাঁড়িয়ে আছে, তাই ওই দিকে না গিয়ে আরো হাঁটতে থাকলাম। ডান দিকে বাঁক নিয়ে আরেকটা দোকান খোলা পেলাম; কিন্তু সেটাও চুল কাটার দোকান।
জায়গাটা আরো নির্জন, তাই ফিরে এলাম সেই কুকুরওয়ালা দোকানে। এসে দেখলাম, কুকুর ভেতরে একটা সুন্দর পরিষ্কার বিছানায় শুয়ে আরামের ঘুম ঘুমোচ্ছে। বাহ, কী ভাগ্যবান বার্লিনের কুকুর! জগতের সব কুকুর যদি এভাবে নরম বিছানায় ঘুমোতে পারত! তবে এখানে একটি কথা আছে। বাংলাদেশে অনেকে কুকুর পোষে বাড়ি পাহারা দেয়ার জন্য। ছোটবেলা আমাদের গ্রামের বাড়িতেও একটি কুকুর ছিল, রাতে চোর এলে ঘেউ ঘেউ করে বাড়িসুদ্ধ লোকজনের ঘুম ভাঙাত। এ ভাবে আরামে ঘুমালে কি কুকুর রাতে চোর তাড়াতে পারবে?
চুল কাটা মানুষের আদি ব্যবসায়গুলোর অন্যতম, সবাই যখন ঘরে ঘুমোচ্ছে তখন বার্লিনের সব নাপিত জমজমাট ব্যবসায় করছে। দোকানি সেই কুকুর নিয়ে এসে দোকানদারি করছে, যে কুকুর মানুষের কাছে ঐতিহাসিকভাবে সবার আগে পোষ মেনেছিল। এসব তাত্ত্বিক ভাবনা মন থেকে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে ভেতরে ঢুকে ক্যাশিয়ারের কাছে আমার সমস্যার কথা বললাম। সে আমার কথা বুঝল। ট্যুর বাস কোম্পানিতে ফোন করে জেনে নিলো, তাদের বাসে উঠতে হলে আমাকে কোথায় যেতে হবে, কিভাবে যেতে হবে, কিন্তু সমস্যা হলো তার ইংরেজি জ্ঞান এমন নয় যে, আমাকে বলে বোঝাতে পারে। এ জন্য সে নিয়ে এলো চাদর গায়ে দেয়া, আধা চুল-কাটা হয়েছে এমন এক কাস্টমারকে। কাস্টমার মহিলা অত্যন্ত যত্নের সাথে আমাকে বলে দিলো, কোথায় এবং কিভাবে যেতে হবে। একটি হাসিমাখা ধন্যবাদ দিয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে এলাম। হিসাব করে দেখলাম এখন আমাকে উল্টো দিকে বেশ কিছু দূর হেঁটে গিয়ে বাসে চড়ে যেতে হবে আরেক জায়গায়। পকেটে হাত দিয়ে দেখি, টিকিটের জন্য আমার কাছে প্রয়োজনীয় ভাঙতি পয়সা নেই।
বাস স্টপে এসে দেখলাম এ দিকে অনেক লোকসমাগম। নির্জন এলাকায় মানুষকেই ভয় পাচ্ছিলাম। আর এখানে এসে মানুষ দেখেই ডরভয় সব চলে গেল। মানুষ মানুষের ক্ষতি করে, ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, আবার এ মানুষই মানুষকে অভয় দেয়, সাহায্য করে। দ্বিতীয় কিসিমের মানুষ বেশি আছে বলেই হয়তো বা দুনিয়াটা এখনো টিকে আছে, নয় তো কবেই ধ্বংস হয়ে যেত। বাস স্টপের সাথেই এক দোকানে ঢুকলাম টাকা ভাঙানোর জন্য। লাইনে দাঁড়িয়ে ক্যাশিয়ারের কাছে খুচরো চাইতে না চাইতে আমার ঠিক পেছনের লোকটি স্বপ্রণোদিত হয়ে আমার হাতে পাঁচ ইউরোর ধাতব মুদ্রা তুলে দিলো। তাকে একটি উষ্ণ ধন্যবাদসহ নোটখানা দিয়ে বেরিয়ে এলাম। জার্মানরা যে এত ভালো মানুষ, তা তো জানতাম না। হবে না কেন? একটা জাতির মধ্যে যদি অন্তর্নিহিত কোনো মৌলিক গুণ না থাকে তা হলে তারা এত বড় হতে পারে না, এত ওপরে উঠতে পারে না! দেখলেন না, সবাই যখন সিরিয়ান শরণার্থীদের তাড়াতে পারলে বাঁচে, তখন জার্মানির অ্যাঙ্গেলা মার্কেল কী সাহসিকতা ও মহানুভবতার পরিচয়টাই না দিলেন! নোবেল কমিটি এ মহীয়সী মানুষটিকে স্বীকৃতি না দিলে কী হবে, তিনি দুনিয়ার তাবৎ, মানবদরদি মানুষের হৃদয়ে নোবেলের মেডেল হয়ে আলো ছড়াবেন যুগ যুগ ধরে!
বাংলাদেশ ষোলো কোটি মানুষের একটি জাতিরাষ্ট্র। এখানে গত ৪৫ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে অনেক উন্নতি হয়েছে, আগামীতে আরো হবে। এখন ভেবে দেখতে হবে, এ আত্মপ্রত্যয়ী ও পরিশ্রমী জাতির আর কী কী মানবিক ও নৈতিক গুণ আছে, যা কিনা অদূর ভবিষ্যতে তাকে বিশ্বসভায় একটি উঁচু ও সম্মানিত আসনে বসতে সাহায্য করবে। ওই গুণগুলোকে শনাক্ত করে একটি ব্যাপকভিত্তিক সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সব নাগরিকের হৃদয়-মনে ছড়িয়ে দিতে হবে। তারপর ওই গুণগুলোকে সর্বদা শাণ দিতে হবে। তাহলে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে পৃথিবীর কোনো শক্তিই ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।
এত সব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ দেখলাম, বাস এসে সামনে দাঁড়িয়েছে। অন্যান্য যাত্রীর সাথে আমিও বাসে উঠে গন্তব্যে গিয়ে নামলাম। তারপর কয়েক কদম হেঁটে এক বিশাল পুরনো চার্চের পাশে গিয়ে টিকিট কেটে ট্যুর বাসে উঠে বসলাম। বার্লিনের চোখ ঝলসানো বড় বড় দালান কোঠা, চওড়া সোজা রাস্তা, পর্যটকদের ভিড়, ফুটপাথে মানুষজনের কর্মচাঞ্চল্য ইত্যাদি দেখে দেখে চোখ দু’টো ক্লান্ত হয়ে আসছে। হেডফোনে ধারা বর্ণনা শুনছি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কোন রাস্তায় কী পরিমাণ ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে, কোন কোন দালান পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে, কোনগুলো যুদ্ধের আগের বিল্ডিং, কোনগুলো পরে তৈরি, হিটলার কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে জার্মান নাগরিকত্বের শপথ নিয়েছিল ইত্যাদি, ইত্যাদি।
শুনছি আর ভাবছি, বার্লিনের ইতিহাস মানে যুদ্ধের ইতিহাস, বার্লিনের ইতিহাস মানে হিটলারের ইতিহাস। বার্লিন তথা আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস পড়তে গেলে এর পাতায় পাতায় পাওয়া যায় হিটলারের হাতের ছোঁয়া। আরো ভাবছি, কে বলে হিটলার পরাজিত হয়েছে? সে হয়তো বা যুদ্ধে হেরেছে, কিন্তু দিব্যিই তো সে ইতিহাস ‘জয় করে’ বসে আছে। হিটলারকে বাদ দিয়ে আজো আধুনিক ইউরোপের ইতিহাস হয় না। বার্লিনের ব্যস্ততম রাজপথে হাঁটতে গিয়ে আমার মনে হয়েছে, আমি যেন হিটলারের ছায়া দেখছি, চুপি চুপি আমাকে অনুসরণ করছে এবং কানে কানে বলছে, What is war, no one knows better than a warrior. 'What is war, no one knows better than Hitler'.
বার্লিন দেখতে গিয়ে আরেকটি বিষয়ে আমার বোধোদয় হলো। জ্ঞান-বিজ্ঞানের যত শাখা-প্রশাখা আছে তার মাঝে ব্যাপ্তিতে ও গভীরতায় ইতিহাস সবচেয়ে ব্যাপক, বিস্তৃত, সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী। আজ যা ভাষা, আজ যা অর্থনীতি, আজ যা রাজনীতি কিংবা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, আজ যা কূটনীতি, যা রণনীতি, আজ যা সমাজবিজ্ঞান, কালের আবর্তে সব কিছুই বিলীন হয়ে যায় ইতিহাসের গর্ভে, সব কিছু গলিত মথিত হয়ে, হয়ে যায় ইতিহাস! সময়ের সাথে সাথে ইতিহাস ধারণ করে ফেলে অন্য সব জ্ঞানকে। তাই ইতিহাসকে বলা যায় সব জ্ঞানের উদার ও যত্নশীল ধারক ও সংরক্ষক। বলে রাখি, পুরনো দিনের তথ্য-উপাত্তের সমাহারই ইতিহাস নয়, সত্যের অনুসন্ধানও ইতিহাস নয়, অতীত দিনের ঘটনাবলির বর্ণনাও ইতিহাস নয়। ইতিহাস হলো বর্তমান থেকে অতীতকে দেখা, বোঝা ও ব্যাখ্যা করা। যেহেতু বর্তমান বদলায়, তাই ইতিহাসও বদলায়।

লেখক : যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনীতির প্রফেসর ও অ্যাকাডেমিক জার্নাল সম্পাদক
Email : wahid2569@gmail.com
++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
facebook ID : Rupok Chowdhury Protik
ইউরোপ ঘুরে এলাম - পর্ব ০১

ভালোবাসার শহর প‍্যারিস, শিল্প সাহিত‍্য সংস্কৃতির শহর প‍্যারিস।

পুরো ইউরোপ জুড়েই দেখার জায়গার শেষ নেই। কোন একটা রাস্তার ধারে বসে একটা কফি নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা পার করে দেয়া যায়। অসম্ভব সুন্দর আবহাওয়া, চমৎকার ব‍্যবহারের মানুষজন আর পরিষ্কার রাস্তাঘাট... সব মিলিয়ে অনেকেরই স্বপ্ন থাকে একবার হলেও ইউরোপ ঘুরে আসার।

আমি কিছুদিন আগে গিয়েছিলাম প‍্যারিস, একটা কনফারেন্স এটেন্ড করতে। ফিরে এসেছি, কিন্তু মন এখনো পড়ে আছে সেই ক‍্যাফে ডি এলবার্ট, আর রুয়ে অর্ডেনার এর রাস্তায়।

অনেক গল্প আর ছবি জমে আছে শেয়ার করার জন‍্য। আজ শুরু করলাম পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আর সুন্দর, অসাধারন লুভর মিউজিয়াম দিয়ে।

লুভর সম্পর্কে কিছু তথ‍্য:

# লুভর এর পুরো বিল্ডিংটাকে মিউজিয়াম বানাতে প্রায় ২০০ বছর লেগে গিয়েছিলো।
# ইতালি, মিশর ও পরবর্তীতে নেপোলিয়নের প্রচারাভিযানের সময় জাদুঘরের অনেক কাজ লুট করা হয়েছিল
# আমেরিকান স্থপতি আই.এম. পেইয়ের গ্লাস পিরামি আজ লুভারের প্রতীক হিসাবে দেখা যায়, কিন্তু এটি যখন প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮৯ সালে, তখন কিছু সমালোচক এই ঐতিহাসিক প্রাসাদের স্থাপত্য নিরস্ত্রীকরণের সাথে তাল মিলিয়েছিলেন।
# মোনালিসা ছবিটা যেই ঘরে রাখা আছে, সেই ঘরেই লুভর এর সবচেয়ে বড় ছবিটা রয়েছে, কিন্তু অনেকেই সেটা খেয়াল করেন না। আমিও করিনি :P
# আপনি নেপোলিয়ন III এর সময়কালের মতই ভবনটি দেখতে পাবেন। বিল্ডিং ডিজাইনে তেমন কোন পরিবর্তন আনা হয়নি।

উপরের তথ‍্যগুলো নেট ঘেটে পাওয়া। কারো কোন সাজেশন/কারেকশন থাকলে কমেন্টে জানাতে পারেন।

কিভাবে যাবেন:

প্রথমেই আপনার শেনগেন ভিসা যোগাড় করতে হবে। ঢাকায় ফ্রান্স এর নিজস্ব এ‍মব‍্যাসি আছে। এমব‍্যাসির সাইটে গেলেই সব তথ‍্য পাবেন। কাগজপত্র ঠিক থাকলে ভিসা পাওয়া তেমন কোন কঠিন কাজ না। আমার অন্তত কোন সমস‍্যা হয়নি। খুব বড় কোন এমাউন্ট দেখাতেও হয় না। কিন্তু সব দেখে ভিসা অফিসারের যেন মনে হয় আপনি ইউরোপ ভ্রমনের সামর্থ রাখেন।
এরপর প্লেনের টিকেট কাটবেন, প্লেনে উঠবেন, লম্বা দুইটা ঘুম দিবেন। চোখ খুলো আকাশের দিকে তাকালেই বুঝবেন কিছু একটা অন‍্যরকম। গাঢ় নীল আকাশ, থোকা থোকা মেঘ, আর নিচে ছবির মত ম‍্যাপ করা সবুজ দেখেই বুঝে যাবেন আপনি ইউরোপে ঢুকে গেছেন।
এরপর ইমিগ্রেশন পার করে রেল আর মেট্রো ধরে পৌছে যাবেন প‍্যারিস।

গুগল এর একটা অ‍্যাপ আছে - গুগল ট্রিপস। ওইটা নামালেই প‍্যারিস আপনার হাতের মুঠোয়। এয়ারপোর্টে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পাবেন ফ্রি তে।

তো আর দেরি কেন? আজই শুরু করে দিন আপনার ইউরোপ ভ্রমনের প্ল‍্যান। শুভকামনা আপনার জন‍্য। ঘুরে এসে কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না :)

গ্রুপে যেহেতু একটার বেশী ছবি দেয়া যায় না, তাই একটা ছবিই আপলোড দিলাম।

লুভর এর আমার তোলা সব ছবি দেখতে পাবেন এখানে: facebook ID : Rupok Chowdhury Protik
ইউরোপ ঘুরে এলাম - পর্ব ০১

ভালোবাসার শহর প‍্যারিস, শিল্প সাহিত‍্য সংস্কৃতির শহর প‍্যারিস।

পুরো ইউরোপ জুড়েই দেখার জায়গার শেষ নেই। কোন একটা রাস্তার ধারে বসে একটা কফি নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা পার করে দেয়া যায়। অসম্ভব সুন্দর আবহাওয়া, চমৎকার ব‍্যবহারের মানুষজন আর পরিষ্কার রাস্তাঘাট... সব মিলিয়ে অনেকেরই স্বপ্ন থাকে একবার হলেও ইউরোপ ঘুরে আসার।

আমি কিছুদিন আগে গিয়েছিলাম প‍্যারিস, একটা কনফারেন্স এটেন্ড করতে। ফিরে এসেছি, কিন্তু মন এখনো পড়ে আছে সেই ক‍্যাফে ডি এলবার্ট, আর রুয়ে অর্ডেনার এর রাস্তায়।

অনেক গল্প আর ছবি জমে আছে শেয়ার করার জন‍্য। আজ শুরু করলাম পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আর সুন্দর, অসাধারন লুভর মিউজিয়াম দিয়ে।

লুভর সম্পর্কে কিছু তথ‍্য:

# লুভর এর পুরো বিল্ডিংটাকে মিউজিয়াম বানাতে প্রায় ২০০ বছর লেগে গিয়েছিলো।
# ইতালি, মিশর ও পরবর্তীতে নেপোলিয়নের প্রচারাভিযানের সময় জাদুঘরের অনেক কাজ লুট করা হয়েছিল
# আমেরিকান স্থপতি আই.এম. পেইয়ের গ্লাস পিরামি আজ লুভারের প্রতীক হিসাবে দেখা যায়, কিন্তু এটি যখন প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮৯ সালে, তখন কিছু সমালোচক এই ঐতিহাসিক প্রাসাদের স্থাপত্য নিরস্ত্রীকরণের সাথে তাল মিলিয়েছিলেন।
# মোনালিসা ছবিটা যেই ঘরে রাখা আছে, সেই ঘরেই লুভর এর সবচেয়ে বড় ছবিটা রয়েছে, কিন্তু অনেকেই সেটা খেয়াল করেন না। আমিও করিনি :P
# আপনি নেপোলিয়ন III এর সময়কালের মতই ভবনটি দেখতে পাবেন। বিল্ডিং ডিজাইনে তেমন কোন পরিবর্তন আনা হয়নি।

উপরের তথ‍্যগুলো নেট ঘেটে পাওয়া। কারো কোন সাজেশন/কারেকশন থাকলে কমেন্টে জানাতে পারেন।

কিভাবে যাবেন:

প্রথমেই আপনার শেনগেন ভিসা যোগাড় করতে হবে। ঢাকায় ফ্রান্স এর নিজস্ব এ‍মব‍্যাসি আছে। এমব‍্যাসির সাইটে গেলেই সব তথ‍্য পাবেন। কাগজপত্র ঠিক থাকলে ভিসা পাওয়া তেমন কোন কঠিন কাজ না। আমার অন্তত কোন সমস‍্যা হয়নি। খুব বড় কোন এমাউন্ট দেখাতেও হয় না। কিন্তু সব দেখে ভিসা অফিসারের যেন মনে হয় আপনি ইউরোপ ভ্রমনের সামর্থ রাখেন।
এরপর প্লেনের টিকেট কাটবেন, প্লেনে উঠবেন, লম্বা দুইটা ঘুম দিবেন। চোখ খুলো আকাশের দিকে তাকালেই বুঝবেন কিছু একটা অন‍্যরকম। গাঢ় নীল আকাশ, থোকা থোকা মেঘ, আর নিচে ছবির মত ম‍্যাপ করা সবুজ দেখেই বুঝে যাবেন আপনি ইউরোপে ঢুকে গেছেন।
এরপর ইমিগ্রেশন পার করে রেল আর মেট্রো ধরে পৌছে যাবেন প‍্যারিস।

গুগল এর একটা অ‍্যাপ আছে - গুগল ট্রিপস। ওইটা নামালেই প‍্যারিস আপনার হাতের মুঠোয়। এয়ারপোর্টে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পাবেন ফ্রি তে।

তো আর দেরি কেন? আজই শুরু করে দিন আপনার ইউরোপ ভ্রমনের প্ল‍্যান। শুভকামনা আপনার জন‍্য। ঘুরে এসে কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না :)

গ্রুপে যেহেতু একটার বেশী ছবি দেয়া যায় না, তাই একটা ছবিই আপলোড দিলাম।

লুভর এর আমার তোলা সব ছবি দেখতে পাবেন এখানে: https://www.facebook.com/media/set/…   https://www.facebook.com/rupokify
Image may contain: 1 person, sky and outdoor
https://www.facebook.com/rupokify

++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
কম খরচে মানালি
Istiak Alam Pial·Thursday, October 13, 2016
 এর চেয়ে সুন্দর যায়গা আর কি হতে পারে।
মন খারাপ হয়ে যায় এইসব যায়গায় ট্যুর দিয়ে চলে আসলে।
#রোটাং_পাস
#মানালী
আমি চার জনের ট্যুরের বিস্তারিত বলছি।

বাংলাদেশ থেকে আগে ভিসা করে নিন। সবচেয়ে ভাল সিজন হচ্ছে নভেম্বরের মাঝামাঝি অথবা ফেব্রুয়ারির শেশের দিকে। বেনাপোল বর্ডার দিয়ে কলকাতায় ঢুকে পড়ূন। যদি ডিরেক্ট বাসে যান তাহলে ১৪০০ টাকার মতো পড়বে। ট্রেনের খরচ জানা নেই।কলকাতায় বাস থামবে মারকু স্ট্রীটে। ওখানের সব বাংলাদেশী থাকে। ১০০০ টাকার মধ্যে নন এসি আর ১৫০০ টাকার ভেতরে নন এসি বাস পাবেন।

কলকাতা থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে যাওয়া সবচেয়ে দ্রুতগামী ট্রেন হল রাজধানী এক্সপ্রেস। বিকাল ৫টায় ছাড়ে। যদিও ট্রেনের টিকেট পাওয়া কষ্টকর, আপনই একটু আশে পাশে ট্রেভেল এজেন্সি থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন। সবধরনের খাওয়া দাওয়া আপনই ওই টিকিটের সাথেই পাবেন।দিল্লীতে পরের দিন সকাল ১১টায় পৌছাবেন। স্ট্রেশন থেকে মেন গেট দিয়ে বের হয়েই পাহাড়গঞ্জ। ওখানে ১৫০০ টাকার মধ্যে এসি রুম পেয়ে যাবেন। এবার গোসল করেই খোজ করুন কাশ্মীরী বাস স্টেন্ডের অখান থেকে বিকাল ৪/৫ টার দিকে মানালীর উদ্দ্যেশ্যে বাস ছাড়ে।যদি রেস্ট নিতে চান তাইলে ওইদিন এবং পরের দিন বিকাল পর্যন্ত দিল্লী ঘুরতে পারেন। আপনি ট্রেভেল এজেস্নির সাথেও যেতে পারেন, কিন্তু অনের টাকা গুনতে হবে।

আমি যে সময়ের কথা বলছি সেটা হলো মানালির টপ সিজন, বাস ভাড়া যাওয়ার সময় ১৫০০ রুপি হয়ে পারে, আপনই পরের দিন ৮ টার মধ্যে মানালী পৌছে রুম নিয়ে নিন ৩০০০ রুপির মতো পড়বে খরছ, মাথায় রাখবেন রুমে যেনো হিটার থাকে, ওখানে প্রচন্ড ঠান্ডা। রুমে একটু সময় থেকে আপনই রিসিপশনে গাড়ির সাথে কথা বলুন সর্বোচ্চ ৫ হাজার রুপি নেবে "রোটাং পাস" (৫২ কিলো) ঘুরিয়ে আনার জন্য। রোটাং পাসে সারাদিন ঘুরে রাতে এসে এলাকায় লোকাল কোনো দোকানে খাওয়াদাওয়া করুন । তবে দাম জিজ্ঞেস সরতে ভুলবেন না কোনো যায়গায়।

পরের দিন ঘুম থেকে উঠেই লোকাল সাইড হেটে ঘুরতে পারেন, গাড়ী নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই । অঝতা খরচ। হাডিম্বা টেম্পল, হিমাঞ্চাল মিউজিয়াম, বন বিহার, মল রোড, চিনা মন্দির, ক্লাব হাউজ সবই ঘুরে দেখতে পারেন। অবশেষে হাতে যদি সময় থাকে বিপাশা নদীর পাশে বসে থাকুন, পানির ঝমঝম শব্দে মন ভাল হয়ে যাবে।এখন ফেরার পালা বিকাল ৫ টায় আপনই আবার দিল্লীর উদ্দেশে ছেড়ে আসা বাসে উঠে পড়ুন। খরচ সমান। তাছাড়া থাকতে চাইলে আরেক রাত থাকতে পারেন মানালী। এবার নিজের দেশের টানে যেভাবে গিয়েছিলেন সেভাবে ফিরে আসুন।
#খরচ
ঢাকা টু কলকাতা ১৪০০
কলকাতায় রাতে থাকা ১৬০০
ট্রেনের টিকিট ৩০০০
দিল্লীর হোটেল ভাড়া ১৫০০
দিল্লী টু মানালী ১৫০০
মানালী হোটেল ভাড়া ৩০০০
রোটাং পাসের জন্য গাড়ী ভাড়া ৫০০০
আপনই ইন্ডিয়া যাওয়ার পরে প্রতিবেলা ১৫০ রুপি করে লাগবে খেতে। তবে নরমাল রেস্টুরেন্টে। আমি আবারো বলছি যেখানেই খাবেন দাম জিজ্ঞেস করে খাবেন।সব মিলিয়ে জনপ্রতি ১৫০০০ রুপি সাথে নিয়ে গেলে আপনি মহা আনন্দে ঘুরে আসতে পারবেন।

                          ++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
আগ্রার তাজমহল দেখে মুগ্ধতার রেশ না কাটতেই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল মুগ্ধতার আরেক খনি আগ্রা ফোর্ট। লাল ইটে মোড়ানো পথ বেয়ে লাল উঁচু প্রাচীরে ঘেরা প্রাসাদে প্রবেশ করলাম আমরা। তাজে যে সম্রাট-সম্রাজ্ঞীর সমাধি দেখে এলাম তাদের বাস ছিল এই প্রাসাদে। নাটকে, উপন্যাসে, চলচ্চিত্রে, ইতিহাসের বইয়ে কতবার কতভাবে জেনেছি তাদের কথা। এ যেন সেই সময়ের সংস্পর্শে আসা, সময়কে দেখা খুব কাছ থেকে।আগ্রা ফোর্টের দেয়ালে দেয়ালে কারুকাজ। আবাসনের পাশাপাশি রাজ পরিবারের বিনোদন, গান-নাচের আসর, রাজকার্যের জন্য দরবার হল কী নেই এখানে। বর্তমান দুর্গটির অধিকাংশই মোঘল আমলে নির্মিত হলেও সেখানে ১১ শতকে নির্মিত একটি প্রাচীন দুর্গের অবস্থান ছিল। ১৪৭৫ সালে আগ্রা ফোর্ট ছিল রাজা বাদল সিং এর অধীনে ইট নির্মিত একটি সামরিক দুর্গ। যার নাম ছিল বাদলগড়। ইতিহাসে ১০৮০ সালে সর্বপ্রথম এর উল্লেখ পাওয়া যায়। এ সময়ে গজনভীর সামরিক বাহিনী এই দুর্গ দখল করে। সুলতান সিকান্দার লোদি দিল্লী থেকে তার রাজধানী আগ্রায় স্থানান্তর করেন। সুলতানি আমলে আগ্রা থেকেই রাজকীয় কর্মকান্ড পরিচালিত হত। তার পুত্র ইব্রাহিম লোদি ১৫২৬ সালে পানিপথের যুদ্ধে সম্রাট বাবরের নিকট পরাজিত ও নিহত হবার পূর্ব পর্য়ন্ত এখানে অবস্থান করেন। সিকান্দার লোদি এই কেল্লার বেশ কিছু ইমারত ও ইদারা নির্মাণ করেছিলেন।এর ইতিহাস বদলেছে সেই ইব্রাহিম লোদী থেকে শুরু করে বাবর, হুমায়ূন, আকবর, জাহাঙ্গীর, শাহজাহান, আওরঙ্গজেবের হাত ধরে। একে দূর্গের জটিল অবয়ব দেন সম্রাট আকবর। তবে এর গঠন সর্বোচ্চ নান্দনিকতা পায় শাহজাহানের হাতে। সেনাদের দূর্গকে তিনি পরিণত করেন রাজপ্রাসাদে।যমুনার তীরে নির্মিত দূর্গটির চারদিকে এমনভাবে দেয়াল তোলা হয়েছে যাতে বোঝা না যায় কোনটা ঠিক এর প্রবেশ পথ। দেয়ালের গঠন আর নকশার চাতুর্যই এর কারণ।চারদিকে কয়েক স্তরের উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা পুরো দুর্গ। তার বাইরে দিয়ে চারদিকেই রয়েছে গভীর খাদ। অধিকতর নিরাপত্তার জন্যই এ গভীর খাদ। পানি থাকতো এ খাদে। সাঁতার কাটতো কুমিরও। আগ্রা ফোর্টের আকর্ষণের কেন্দ্রে রয়েছে এর শিষ মহল। হাম্মাম অর্থাৎ রাজ গোসলখানায় অসাধারণ ওয়াটার ইঞ্জিয়ারিং করা হয়েছে। পানি গরম করার জন্য ল্যাম্প ব্যবহার করা হত এখানে।আগ্রা ফোর্টের নিচে আছে ফাঁপা সুড়ঙ্গ, যার মধ্য দিয়ে যমুনার পানি বয়ে যেত। ফলে সমগ্র মহলটি থাকত ঠান্ডা। বিশাল এলাকা জুড়ে দূর্গের বিস্তার। রানীরা থাকতেন নিচের দিকের ঘরগুলোতে, যাতে ঠান্ডা আবহাওয়া পেতে পারেন সবসময়। দূর্গের ছাদে বসত গান নাচের আসর। মুঘলরা বাগান ভালোবাসতো। তাই প্রত্যেক মুঘল স্থাপত্যের সাথে সুদৃশ্য বাগান অপরিহার্য। আকবর যখন শাসনভার নেন তখন তিনি পেয়েছিলেন এর ধ্বংসাবশেষ। এরপর রাজস্থান থেকে লাল বেলেপাথর এনে তিনি পুনর্নির্মাণ করেন এটি।সম্রাজ্ঞী যোধা বাই এর ভবনটি লাল , এর নির্মাতা আকবর।অন্যান্য ভবনগুলোর নাম জাহাঙ্গীর-ই মহল, খাস মহল, দরবারই খাস, আর শীষ মহল।আগ্রা ফোর্টের আরেকটি বিশেষত্ব হল, এটির মাঝে শুধু নারীদের নামাজ পড়ার জন্য আলাদা মসজিদ আছে। এর নাম নাগিনা মসজিদ। আগ্রা ফোর্টেই বন্দী ছিলেন শাহজাহান, সন্তান আওরঙ্গজেব বন্দী করে রেখেছিলেন তাকে। নিজ প্রাসাদ থেকে তিনি দেখতে পেতেন দুই কিমি দুরের যমুনার ওপারে তাজমহলকে। যে আট বছর তিনি জীবিত ছিলেন শতাধিক চিঠি লিখেছিলেন পুত্রকে , তাকে ক্ষমা করেছেন , সম্রাট হিসাবে মেনে নিয়েছেন এসব জানিয়ে অনুরোধ করতেন তার সঙ্গে দেখা করতে । কিন্তু জীবিত পিতার সামনে দাঁড়াবার সাহস আওরঙ্গজেবের ছিল না ।তাই সম্রাট পুত্রের সাথে বন্দী পিতার কখনো দেখা হয় নাই । বিভিন্ন সম্রাটদের সময় আগ্রা ফোর্টের সংস্কার হয়েছে। কিন্তু ব্রিটিশরা এর ব্যাপক পরিবর্তন করে। ব্রিটিশ সৈন্যদের ব্যারাক নির্মাণের জন্য ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয় এ দুর্গে। কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে অনেক ভবন। কোথাও কোথাও ক্ষয়ে গেছে এর ইট-পাথর-সুরকি। কিন্তু তারপরও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে আগ্রা ফোর্ট। ইতিহাস ও মহাকালের সাক্ষী হয়ে। হয়তোবা প্রেম অথবা অপ্রেমেরও। আমরা জয়পুর থেকে দুই দিনের জন্য গাড়ি ভাড়া করে একদিন আগ্রা অবস্থান করে তাজমহল , আগ্রা কেল্লা দেখে পরদিন দিল্লি চলে যাই । ঢাকা থেকে কোলকাতা হয়ে ট্রেনে বা বিমানে দিল্লি গিয়ে বাসে বা ট্যাক্সি নিয়ে আগ্রা যাওয়া যায় ।

                                        ++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
Mumbai এ বাংলাদেশীরা থাকতে পারেন এমন কিছু হোটেল এর নাম -
******************************
Hotel Krisma: Behind Chitra Cinema, Dadar East, Mumbai
10 mins walk to tmc
1km distance from tmc
1500/-night
*************************************
Hotel Aroma: rate : unknown
*********************************************
Obani lodge : daily rate: 1200/- rupees thke suru
*Oboni r onek gula lodge...sb kytai 5min
**jodi besidin thaka lage choto flat vara nea jay

                                     
                                        +++++++++++++++++++++++++++++++++++++
কাচ নেহি দেখা তো কুছ নেহি দেখা (Ahmedabad to Kutch: From City Crowd to Desert)
Jyoti Bikash Das·Monday, 24 April 2017
[জায়গাটা সমুদ্রের কাছে, বছরের বড় একটা সময় মোটামোটি জলাবদ্ধ থাকে। তাই, যখন পানি শুকিয়ে যায়, পড়ে থাকে লবণের দলা। একটা জায়গায় গিয়ে মনে হয় এই পাশে গুজরাট আর ঐ পাশে পুরো পৃথিবীতে শুধু সাদা লবণ। ডেজার্টের মাঝখানে থাকলে হয়ত মনে হত পৃথিবীতে লবণ ছাড়া আর কিছু নেই। গিয়েছিলাম দুইজন মিলে, ছবি তোলা সব ফোনের দূর্বল ক্যামেরায়। ডি এস এল আর নিয়ে যাবার পরেও কেন ফোনে ছবি তুলেছি সেটা নোটে লিখেছি।]
গুজরাট ট্যুরিজমকে জনপ্রিয় করার জন্য সেখানকার রাজ্য সরকার বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। তার মধ্যে একটা হচ্ছে রন উৎসব। গুজরাটের ভুজে, কাচ নামক জায়গায় মোটামোটি তিনমাস ব্যাপী এই আয়োজন।  রন উৎসব যেখানটায় হয়, তার পাশেই আছে সল্ট ডেজার্ট। ইন্ডিয়ার ট্যুরিস্ট স্পটগুলো বিভিন্ন ম্যুভিতে এমনভাবে দেখানো হয়েছে যে, সেই জায়গাগুলোকে মনে রাখি ম্যুভির কোন সিন দিয়ে। সল্ট ডেজার্ট হল সেই জায়গা যেখান সোনাক্ষী আর শাহীদ কাপুর সারি কে ফল সা বলে নাচানাচি করেছে।
আমাদের প্ল্যান ছিল এরকমঃ ঢাকা থেকে বাসে কলকাতা, কলকাতা থেকে প্লেনে আহমেদাবাদ, আহমেদাবাদ থেকে ভুজ বাসে, সেখানে রন উৎসব দেখে আবার বাসে আহমেদাবাদ, আহমেদাবাদ থেকে প্লেনে গোয়া। এই প্ল্যান অনুযায়ী এর মধ্যে তিন দিন চলে গেছে কিন্তু আমরা এক রাতও হোটেলে শুই নি, ঘুমিয়েছি বাসে-প্লেনে। আসলে কি হয় দেখা যাক।
বাংলাদেশের বর্ডার ক্রস করার পরেই অদ্ভুত একটা ট্রানজিশান হয়। মদিনা ভাতের ঘর, আল বাইক রেস্টুরেন্ট থেকে রাস্তার দুই পাশের দোকান গুলো হঠাৎ করে কার্তিক স্টোর, শ্রীগোবিন্দ রেস্টুরেন্ট হয়ে গেছে। বাংলা লেখার ফন্ট গুলোও সিয়াম রুপালি থেকে অজানা কোন ফন্টে পরিবর্তন হয়ে গেছে। মসজিদের জায়গায় এখন সৎসঙ্গ আশ্রম আর মন্দির দেখা যাচ্ছে। কিন্তু মানুষগুলো দেখতে একই রকম, কথাও বলছে একই ভাষায়। পার্থক্য শুধু মাঝখানের কাঁটাতারের বেড়া।
কলকাতা পৌছানোর পর প্রথম কাজ সিম কেনা, দ্বিতীয় কাজ এপি ফিজ খাওয়া। সেই এপি ফিজ যা আমার আর আলমের অত্যন্ত পছন্দ, দেশে ভেজাল নাকি কিসের দায়ে নিষিদ্ধ হবার আগে পর্যন্ত আমি আর আলম প্রতিদিন একটা করে পান করতাম। খুব আবেগ নিয়ে চুমুক দিচ্ছিলাম, কিন্তু কেন জানি মন ভরছিল না। অনেক দিন পরে তো! ব্যাপারটা অনেকটা সাবেক প্রেমিকার সাথে দেখা করার মত। নস্টালজিয়া আছে, প্রেম নাই, আগের মত ভাল লাগা নাই। যাই হোক, দুপুরের খাবার খেলাম কস্তুরীতে। এর আগের বার যখন এখানে এসেছিলাম, সেবারও কস্তুরীতে খাওয়া হয়েছে। কিন্তু এবার এত মজা লাগছে কেন খাবার? আমাদের অনেক খিদা লেগেছে তাই নাকি খাবারের স্বাদ অনেক ভাল হয়ে গেছে বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ খেয়াল করলাম দেয়ালে টানানো সার্টিফিকেট অনেকগুলা, টাইমস অব ইন্ডিয়ার বেস্ট রেস্টুরেন্ট এওয়ার্ড। টানা কয়েকবছর ধরে তারা এওয়ার্ড পাচ্ছে, শুধু ২০১৪ সাল বাদে। সেবারই এসেছিলাম।
আমি যতবার বাসে-ট্রেনে চড়েছি পাশে সাধারণত উটকো টাইপ লোক বসেছে এক ঘন্টা যাবার পর মুখ হা করে, পা দুইটা নবাবী ভঙ্গিতে ছড়িয়ে দিয়ে, ঘুমের মাঝে মাথাটা আমার কাধের উপর এলিয়ে দিয়েছে। আমি একটু পর পর ঝাঁকুনি মেরে সরিয়ে দিয়েছি।
কলকাতা এয়ারপোর্ট, এখন পর্যন্ত আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর এয়ারপোর্ট। যদিও বেশী এয়ারপোর্ট দেখিনি আমি।
কলকাতা থেকে আহমেদাবাদ যাব, সবচেয়ে সস্তা ছিল ইন্ডিগোর ফ্লাইট। সেটারই টিকেট করা হল। প্রতি সারিতে দুই পাশে তিনটা করে মোট ছয়টা সিট। জানালার পাশে দুইটা সিট আমাদের। আমি আর আমার বন্ধু মারামারি করছি কে উইন্ডো সিট নিবে। ত্যাগ স্বীকার আমিই করলাম। মাঝখানের সিটে আমি। আবার নিশ্চই এক উটকো লোক এসে পাশে বসবে।
আমার সকল অতীত রেকর্ড ভঙ্গ করে পাশে এসে বসল অতিশয় সুন্দরী তরুণী। বন্ধু তখন আফসোসে মারা যাচ্ছে। অফার দিল উইন্ডো সিট নিব নাকি। বললাম, তুমি মারা খাও। অলরেডি আমার অতীত এক্সপেরিয়েন্সের কথা মনে করে একরকম পুলক অনুভব করছিলাম। হিন্দি-ইংরেজি মিশিয়ে কি সুন্দর কুট কুট করে কথা বলছে মেয়েটা ফোনে।
এক বুড়ি মহিলা সিট খুঁজছে। আমার পাশে বসা মেয়েকে এসে বলল, "I think this seat is mine." আমি দোয়া করছিলাম বুড়ি যাতে ভুল হয়। কিন্তু না, আসলে কন্যাই ভুল করেছে। গেট নাম্বার কে সিট নাম্বার ভেবেছে। ভুল করা কন্যার সাথে আর কথা হল না। উঠে সামনে চলে গেল।
উইন্ডো সিটে বসা বন্ধু আমার মিস্টার বিনের ম্যুভি দেখেও এত মজা পায়নি এমন ভাবে হেসে যাচ্ছিল। সিট চেঞ্জ করার অফারটা এখনো আছে নাকি জিজ্ঞেস করব ভাবছিলাম, সাহস পাইনি। পাশে বসা বৃদ্ধা মহিলা তার চারপাশে দশ গ্রামের সবার সাথে গল্প করে যাচ্ছে। অন্না, পুরান্না, ইল্লে কিল্লে সল্লে।
ভুল করা কন্যার দুঃখ ভুলে গিয়েছি হেড ফ্লাইট এটেন্ড্যান্টকে দেখে। সে প্রফেশনাল, খুব স্বাভাবিক সে খুব সুন্দর করে কথা বলবে, সেজেগুজে থাকবে। কিন্তু তার পরেও তার মধ্যে একটা পাশের বাসার মেয়ে টাইপ ব্যাপার ছিল, ব্যাপারটা ফেইক ছিল না। নাম শঙ্খমিত্র, বাঙ্গালী। পিছনের এক ব্যাক্তি প্লেনের ভেতর মশা কেন বলে ঝামেলা শুরু করল। শঙ্খমিত্র এসে ঝামেলা মেটানোর চেষ্টা করল। ঐ বেটা প্রায় ১৫ মিনিট ধরে প্যাঁচাল করল। কিভাবে পারে এত সুন্দর একটা মেয়েকে কটু কথা বলতে! আমার বন্ধু আলম তার চেহারা দেখে জানাল, সে নাকি দেখতে হুবুহু তার সাবেক গার্লফ্রেন্ডের মত। খাবার কোনটাই ফ্রী ছিলনা, পানি ছাড়া। আলম ফ্লাইট এটেন্ড্যান্টকে ডেকে পানি চায়। কিন্তু শঙ্খমিত্র আসে না, সে বিজনেস ক্লাসের ওখানে সার্ভ করে। আজ গরীব বলে শঙ্খমিত্রর কাছ থেকে পানি পেল না আলম! মেয়ে কত লম্বা আন্দাজ করতে পারছিলাম না, অনেক লম্বা মনে হচ্ছিল। ভেবেছিলাম দেড়-দুই ফিট হিল পরেছে হয়তো। নামার সময় খেয়াল করি, পুরাই ফ্ল্যাট জুতা। আলম এখনো ইন্ডিগোর এমপ্লয়ি লিস্টে শঙ্খমিত্রকে খুঁজে বেড়ায়।
আমি এর আগে প্লেন জার্নি করেছি দিনের বেলা। উপর থেকে মাটির দিকে তাকালে মনে হয় গুগল ম্যাপ দেখছি, শুধু একটু বেটার ইমেজ কোয়ালিটি, কুইকবার্ড কিংবা আইকোনোস হবে হয়ত। মেঘের উপর দিয়ে যাবার সময় মেঘগুলোকে রাফ একটা সারফেস মনে হয়। মনে হয় এখুনি নেমে ওখানে হাঁটা শুরু করি। আমরা আহমেদাবাদের কাছাকাছি, প্রায় নয়টা বাজে তখন। আলম জানালা দিয়ে বাইরে তাকাতে বলল। একটা শহরের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছি। লাইটগুলো দেখে মনে হচ্ছে জায়গায় জায়গায় আগুণ লেগেছে। রাস্তার দুইপাশে লাইট দেখে হঠাৎ মনে হবে আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা বের হয়ে যাওয়া দেখছি, রাতের বেলা। নিচের জিনিসগুলো খুব তুচ্ছ মনে হয়। পাখিগুলো আকাশে উড়ার সময় আমাদের হয়ত তাই ভাবে, খুব তুচ্ছ, খুব নগন্য, আমি পাখি, যেকোন জায়গায় যেতে পারি, পাসপোর্ট-ভিসা লাগে না।
আহমেদাবাদ পৌছালাম, খুব বেশী রাত না তখন। এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে অটো নিলাম, গন্তব্য পালদি, সেখান থেকে বাসে করে যাব ভুজ। ড্রাইভার বলল মিটারে যাবে। আমরা সানন্দে রাজী। রাত ৯.৩০-১০ টার মত বাজে। আহমেদাবাদে এমনিতেই খুব একটা লোকজন থাকে না, এমন সময়ে রাস্তা আরো ফাঁকা। আমাদের ইন্ডিগোর প্লেন যে স্পিডে এসেছে মোটামোটি সেই স্পিডে টানা শুরু করল ড্রাইভার। যেসব টার্ন নিচ্ছিল, অল্পের জন্য বাসে লাগে না, অন্য অটোতে লাগে না, কোন মানুষের গায়ে ধাক্কা লাগে না, লাগে আমাদের হৃদপিণ্ডে। আমি আলমকে বললাম, দোস্ত, আজকে মারা গেলে খবরটা বাপ-মা রে দিস, আমার ফোনে ফেইসবুকে লগ আউট করে দিস, খবরদার কোন মেসেজ পড়বি না, রাজু ২৫০ টাকা পায়, দিয়ে দিস আমার হয়ে।
অবশেষে পালদি পৌছালে ড্রাইভার আমাদের মিটার দেখাল, রিডিং ৮০০ সামথিং এর ঘরে। দেখে পুরা মাথা নষ্ট অবস্থা। এই ডিস্ট্যান্স কিভাবে ৮০০ রুপি হয়! পড়ে সে কিজানি একটা কাগজ বের করে দেখাল, রিডিং ৮০০ হলে ভাড়া তিনশ সামথিং। আমাদের কাছে আরো কি ব্রীজের টোল-মোল বলে মোটামোটি ৪০০ রুপি নিয়ে নিল। ইন্ডিয়া আসার পর ইহা আমাদের প্রথম মারা খাওয়া। পরে নেটে দেখে বের করেছিলাম, এই ডিস্ট্যান্স এর অটো ভাড়া ১৫০ রুপির এক রুপিও বেশী হবার কথা না।
পালদি পৌছে হঠাৎ খেয়াল হল আমাদের খাওয়া দরকার। কাছাকাছি একটা রেস্টুরেন্ট দেখে ঢুকতে গেলাম। দারোয়ান জিজ্ঞেস করল, কাহা জায়েঙ্গে? আমি মনে মনে ভাবলাম, ভাই রেস্টুরেন্টে ঢুকছি, সার্কাস কিংবা পুতুল নাচ দেখার জন্য ঢুকছি না অবশ্যই। দারোয়ান ভেতরে কাকে জানি বলল, দুইজন আসছে, জায়গা হবে নাকি। আচ্ছা, এই তাহলে কারণ, রেস্টুরেন্টের ভেতর ভীড় লাগাতে চায় না। আমরা কোন ফাঁকা টেবিল পেলাম না, এক আংকেলের সামনে বসে গেলাম। মেন্যু দেখে খুব একটা সুবিধা করতে পারলাম না। আমরা আংকেলের কাছে পরামর্শ চাইলাম। আংকেল ভাল লোক, কোন খাবারে কি থাকবে জানাল। আমাদের হিন্দী শুনে মোটামোটি অবাক হল, জানাল আমরা বেশ ভাল মতই পার পেয়ে যাব এই হিন্দী দিয়ে। কোন একটা থালি নিয়েছিলাম, রুটি ছিল, একটু ভাতও ছিল, খারাপ না খাবার। আংকেল মুম্বাই এর লোক, মুম্বাই যেতে মানা করল। ট্রাফিকের জন্য নাকি মুভ করতে পারব না। আমি মনে মনে ভাবি, আংকেল একবার ঢাকা এসে ট্রাফিক দেখে যান। ঢাকায় সার্ভাইভ করা লোক আমরা, ট্রাফিক ভয় পাই না।
আমাদের দেশের বাস সার্ভিসগুলোর কত সুন্দর নাম, রয়েল, ঈগল, ইউনিক, শ্যামলী। আর এখানে বাস সার্ভিসের নাম আত্মারাম, স্বামী নারায়ন, শ্রী শাহজানন্দ ট্রাভেলস। টিকেট করা হল শাহজানন্দ এর বাসের। Volvo B11R, Multi Axle সেমি স্লিপার বাস। বাহারী নাম, কিন্তু বাস এবং সার্ভিস দুটোই যাচ্ছেতাই। ইন্ডিয়ানরা তাদের ট্রেন সার্ভিস এত ভাল করেছে যে বাসের দিকে নজর দেয়ার সময় পায় নি। বাসের নাম্বারিং সিস্টেম খুব অদ্ভুত। A0, A1 থেকে শুরু করে হঠাৎ করে 1,2,3,4 একপাশে, তার পর আবার 5,6,7,8 অন্যপাশে। আমাদের সিট খুঁজে পেতে খবর হয়ে গেছে। আবার সিট পাবার পর দেখি সিট পানিতে ভেজা। কোন পানি, কিসের পানি আল্লাহ্‌ মালুম। আমাদেরকে অন্য সিট দেয়া হল চেঞ্জ করে। সকালে ভুজ পৌছানোর পর আমি বাসে ওভারহেড বক্স থেকে ব্যাগ নামাতে গিয়ে দেখি আলমের ক্যামেরার ব্যাগ নাই। আলমকে ঘুম থেকে তুলে যখন বললাম ক্যামেরার ব্যাগ নাই, সে ফাইজলামি করছি ভেবে আবার শুয়ে পড়ল। একটু পরে আসলেই বুঝতে পারল ফাইজলামি করছি না, তখন পুরো বাস তন্ন তন্ন করে খোঁজা শুরু হল। ক্যামেরা ছিল, সিম কার্ড ছিল, আলমের ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, নগদ অর্থ, All are gone. তখন থেকে শুরু হল আমাদের সার্ভাইভাল স্টোরি।
ভোর হচ্ছিল তখন মাত্র, লোকজন রাস্তায় বের হওয়া শুরু করেছে মাত্র। ভ্যানের উপর সব্জি আর ফল সাজানো হচ্ছে। পুরো ভ্যান ভর্তি একেবারে সিঁদুরের মত লাল আম, অন্য আরেকটা ভ্যান ভর্তি ডালিম, তার পাশেরটায় গাজর। এত লম্বা গাজর আমি জীবনে দেখিনি। এখানকার গরুগুলোর শিং এর মত। সবকিছু কেমন জানি লম্বা টাইপ। আমরা হোটেল খুঁজে বেড়াচ্ছি। ইন্ডিয়ায় হোটেল ভাড়া বেশী নাকি আমাদের বলদ মনে করে ভাড়া বেশী চাচ্ছিল বুঝতে পারছিলাম না। যাই হোক, আমাদের টানা তিন দিন হোটেলে না থাকার প্ল্যান এর মধ্যে মাঠে মারা গেছে। শরীর আর কুলাচ্ছিল না। হোটেলে পৌছে আলম আমাদের সাথে যারা বাসে এসেছে লিস্ট ধরে তাদের কল দেয়া শুরু করল। আলম প্রথমে ইংলিশ বলার চেষ্টা করে, কেউ ঠিকমত বুঝে না। পরে তার ভাঙ্গা ভাঙ্গা হিন্দীতে কি যে বুঝাল আলমই জানে! ভাইসাব, আপনে হামারা ক্যামেরা চরি কিয়া হে কিয়া? এই টাইপ কিছু হবে হয়ত। কেউ কি ক্যামেরা চুরি করে নিয়ে গেলে বলবে যে, “হা ভাই, চুরা লিয়া মাজাক কারকে। আব হামারা গার্লফ্রেন্ডকে সাথ দো ফটো খিঁচকে আপকো ভাপাস দে দেঙ্গে!”
দুপুর পর্যন্ত ঘুমালাম। এখন আমাদের কাজ হবে আশেপাশের সবচেয়ে সস্তা রেস্টুরেন্টটা খুঁজে বের করা। মোটামোটি একটা রেস্টুরেন্টে অর্ডার দিলাম গুজরাটি থালি। মেন্যু গুজরাটি ভাষায় লেখা ছিল। ভাগ্যিস উল্টা পাশে ইংলিশ লেখা ছিল, নাহলে জয়নুল আবেদীনের মত খাতা পেন্সিল নিয়ে বসতে হত। ওয়েটার আমাদের বলল পাশের কামরায় যেতে হবে। একই রেটুরেন্টের এক পাশে পাঞ্জাবী আর এক পাশে গুজরাটি খাবার। প্রথমে বড় একটা থালা দিয়ে তাতে কয়েকটা ছোট ছোট বাটি দেয়া হল। তারপর একের পর এক জিনিস আসছিল। লাচ্ছির মত দেখতে প্রায় মাঠার মত স্বাদ এমন এক গ্লাস তরল – খুবই বাজে; ছানার সন্দেশের মত দেখতে চাল দিয়ে বানানো কিছু একটা – জঘন্য স্বাদ; চাটনী টাইপ কিছু একটা – খুবই টক; দুইটা রুটি আর ডাল দিয়ে দুপুরের খাবার সারলাম। এই জায়গায় আমাদের খাবার দাবার বিষয়ক খবর আছে। আমার না হয় পাতলা দেহ, আমার সাথে থাকা ১২০ কেজির কি হবে?
গুজরাটি থালি।
রন উৎসব, কালা দুঙ্গার, সল্ট ডেজার্ট এই তিন জায়গায় যাব, রাত ৯ টার পরে ফেরত আসব এমন হিসাবে ট্যাক্সি ঠিক করা হল, ২২০০ রুপি। গাড়িতে উঠে আমার কাজ হল মানুষ দেখা। এখানে পুরুষদের অধিকাংশ পাঞ্জাবি পরে। লম্বা ধরণের পাঞ্জাবী আর ঢিলাঢালা পাজামা পরে বাইক চালানোতে মনে হয় অন্যরকম ভাব আছে। মহিলাদের শাড়ি পরার ধরণও একটু ব্যাতিক্রম। খুবই কালারফুল আর মাথায় কাপড় দিয়ে রাখে সবসময়। ভাষাও আলাদা, প্রতিটা শব্দের শেষে কেন জানি উ আর ছু লাগিয়ে দেয়। হাম যাভা ছু, মানে হল আমি যাই। হাম তানে প্রেমা করাম ছু, মানে হল আমি তোমাকে ভালবাসি। নতুন একটা ভাষা শেখার আগ্রহ থাকলে মানুষ প্রথম যে কাজটা করে সেটা হল ঐ ভাষায় কিভাবে ভালবাসি বলতে হয়ে সেটা শিখে ফেলে। আমরা সবাই এত ভালবাসার পাগল, তাও দুনিয়ায় যুদ্ধ শেষ হয়না।
একটা জায়গাকে ডেজার্ট বলার জন্য কি হতে হয়, সেখানে গাছপালা কম থাকতে হবে নাকি মানুষ থাকা যাবে না। ডিকশনারিতে দেখেছি আসলে, দুটোই হয়। রাস্তা মোটামোটি সোজা, ড্রাইভার মনে হয় ফিক্স গিয়ারে দিয়ে বসে আছে। দুই পাশে লোকজনের বসতি নাই, গাছপালাও কম। শুধু ঠিক রাস্তার পাশে কিছু কালারফুল গাছ। জংলী ফুল, কিন্তু খুবই সুন্দর, কোনটা লাল, কোনটা বেগুনী। গাড়ির জানালার কাচ নামিয়ে দিয়েছি। বাতাস এসে চুলের বারটা বাজাচ্ছিল আর মনে হচ্ছিল লাইফ ইজ বিউটিফুল।
এই এলাকার লোকজন কি করে ইনকাম করে বুঝে পেলাম না। কেন থাকবে লোকজন এখানে? আমি আলমকে রাস্তায় বিভিন্ন রোড মার্কিং আর স্ট্রিট সাইন এর মানে বুঝাচ্ছিলাম। এক জায়গায় দেখি স্ট্রিট সাইনে মহিষের ছবি আঁকা। এমন সাইন আমি জীবনেও দেখি নাই। এই জিনিস ব্যাখ্যা করতে পারছিলাম না। একটু সামনে দেখি রাস্তার মাঝখানে মহিষের দল সাহেবী ভঙ্গিতে বসে আছে। এবার বুঝতে পারলাম, স্ট্রিট সাইনে মহিষের মানে হল, সামনে মহিষ আছে, যারা আপনাকে পাত্তাও দিবে, Drive at your own risk. এই এলাকায় লোকাল লোকজনের আয়ের অন্যতম উৎস হল মহিষের দুধ। ড্রাইভার আমাদের জিজ্ঞেস করল আমরা মাওয়া (Mava) খাব নাকি। কি জিনিস জিজ্ঞেস করিনি। এক গ্রামের বাজারের মত জায়গায় গাড়ি থামাল। আমরা মাওয়া খেলাম। মাওয়া হল মহিষের দুধের ক্ষীর, অতিরিক্ত মিষ্টি, কিন্তু স্বাদ মুখে লেগে থাকে।
রাস্তার দুই পাশে যত দূর দেখা যায় ফাঁকা জায়গা, সমতল ডেজার্ট। ড্রাইভার জানাল শাহরুখ খান নাকি একটা পাকিস্তানী মেয়েকে জালিমা বলে নেচে নেচে গান গেয়ে গেছে এখানে। আলমও তার বলিউড জ্ঞান ঝাড়ল একটু। আশুতোষ গোয়ারিকার এখানে ফাঁকা একটা জায়গায় ম্যুভির সেট হিসেবে একটা পুরো গ্রাম বানিয়ে ফেলেন। সেখানে লাগান ম্যুভির শ্যুটিং হয়। হৃত্বিক এর মহেনজো দারোও এখানে শ্যুট করা হয়েছে।
আমাদের প্রথম গন্তব্য কালা দুঙ্গার, এখানকার উচ্চতম জায়গা। কালা দুঙ্গার থেকে পুরো সল্ট ডেজার্ট নাকি দেখা যায়। সমতল রাস্তা শেষ হয়ে হালকা পাহাড়ি রাস্তায় প্রবেশ করি। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ আমাদের গাড়ির স্টার্ট বন্ধ হয়ে গেল। ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করি কি হল, সে কিছু বলে না। আমাদের দেখাল যে গাড়ি অটোমেটিক সামনে আগাচ্ছে, যদিও রাস্তা সামনে উপরের দিকে উঠছে। আজব ব্যাপার! ঢালু রাস্তায় গাড়ি নিচের দিকে নামার কথা, এ তো উপরে উঠছে। ড্রাইভার আমাদের কোন এক আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করল। আসল কারণটা আমি জানতাম। গ্র্যাভিটি হিলের অভিজ্ঞতা হল এই প্রথম। ইউটিউবে অনেক ভিডিও আছে। সৌদী আরবে এরকম এক জায়গাকে আল্লাহর কুদরত বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এই জিনিস। ইন্ডিয়াতে এই জিনিস হয়ত ভগবানের কুদরত হবে। কিন্তু আসলে পৃথিবীর অনেক জায়গায়ই এই জিনিস এক্সপেরিয়েন্স করা যায়। গ্র্যাভিটি হিল বা ম্যাগনেটিক হিল বলে। জিনিসটা আমি এক্সপ্লেইন করতে পারব, কিন্তু আমার ট্রাভেল ব্লগকে আমি ফিজিক্স ক্লাস বানাতে চাই না। একেবারে শেষ অংশে আলাদা করে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছি। কারো আগ্রহ থাকলে পড়ে দেখতে পারেন।
কালা দুঙ্গার অনেক বড় ডিজেপয়েনমেন্ট ছিল। উঁচু জায়গা থেকে নিচে তাকাতে ভাল লাগে। কিন্তু এনভায়রনমেন্ট পরিষ্কার না থাকায় দূরে দেখা যাচ্ছিল না। তবে বেশ ভাল বাতাস ছিল, অত খারাপও লাগছিল না। পাহাড়ের একপাশে বসার জায়গায় দুইজন শুয়ে পরলাম। এই রোদে সল্ট ডেজার্ট যাওয়া যাবে না। জীবনে কি পেলাম আর না পেলাম ভেবে দুইজন সিরিয়াস আলোচনা শুরু করলাম।
পাহাড় যেখানে শেষ সেখানে সল্ট ডেজার্টের শুরু। কিন্তু কুয়াশা-ধোঁয়াশা কিছুর জন্য ঠিক মত দেখা যাচ্ছে না।

এই এলাকার হাইয়েস্ট পয়েন্ট।
ইন্ডিয়ায় ট্যুরিজমকে একটু গুছিয়ে এনে খুব সুন্দর বিজনেস চালু হয়েছে। রন উৎসব আসলে কিছুই না, মরুভূমির মাঝখানে একটা অস্থায়ী শহরের মত বানানো হয়েছে। টাকা-পয়সাওয়ালা লোকজন এসে থাকার জন্য টেন্ট সিটি। অস্থায়ী রাস্তা, লাইব্রেরী, মিউজিয়াম, খাবার দোকান, শপিং প্লেইস, গান-বাজনা শোনার ব্যবস্থা সবই আছে এখানে। শপিং আমাদের কাজ না, প্রথম কাজ খাওয়া। আবারো সেই থালি মালি কিছু একটা খেয়ে নিব প্ল্যান করেছিলাম। কিন্তু অর্ডার করলাম ভেজ পুলভ। আসার পরে দেখি এ তো ভেজ পোলাও, পুলভ কোথায়? Pulav লেখা ছিল মেন্যুতে, পোলাও না পড়ে পুলভ পড়েছি। আমার কোন দোষ নাই। এরা মাওয়া কে Mava লিখবে, পোলাও কে Pulav. আলম Pav Bhaji খেতে চেয়েছিল। Pav কে উচ্চারণ করতে হবে পাউ। পাউ ভাজি প্রায়ই টিভিতে, ম্যুভিতে শোনা যায়। আলমকে ছবি দেখালাম, পাউ হল পাউরুটি আর ভাজি হল ভাজি। সে খাবার ইচ্ছা পোষণ করল না আর।
ভেজ পুলভ। সাথে পিঁয়াজ।

মাসালা দোসা। সাদা ঝোল টাইপ জিনিসটা যে পুরোপুরি শেষ করতে পারবে, পৃথিবীর কোন দেশে তার খাওয়ার সমস্যা হবে না।

টেন্ট সিটির মাঝখানে রাস্তা। রাস্তাটা স্থায়ী।
একটু বিকাল না হলে সল্ট ডেজার্টে যেতে যাচ্ছিলাম না। মরুভূমির মাঝখানে দুপুরবেলার রোদ খাবার কোন মানে নেই। সল্ট ডেজার্টে যাবার জন্য অনেক নিরাপত্তাজনিত ব্যাপার স্যাপার পার হতে হয়। ডেজার্টের অপর পাশেই পাকিস্তান কিনা। ডেজার্টে যাবার জন্য আমাদের প্রথমে টিকেট কাটতে হবে, যা দিয়ে আমাদের একটা বাসে উঠিয়ে দিবে। সেই বাস এক কিলোর মত যাবে, সেখান থেকে আবার উট অথবা গাধায় টানা গাড়িতে সল্ট ডেজার্টে যেতে হবে। আমরা যখন টিকেট করতে যাব তখন বাংলাদেশী পাসপোর্ট দেখে একটু ইতস্তত করছিল। আমাদের পাসপোর্টের জেরক্স কপি জমা দিতে বলল। এবার হল জ্বালা, জেরক্স কপি তো নাই। কি করা যায়? আমাদের ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করলে সে বলল আমরা আশেপাশে কোন বাজারে গিয়ে দেখতে পারি আছে নাকি। ড্রাইভার যখন জানতে পারল আমরা বাংলাদেশ থেকে এসেছি সে বলল আমরা আগে কেন জানালাম না। এখানে নাকি বাংলাদেশী আর পাকিস্তানীদের প্রবেশ নিষেধ। সে আমাদের কোন আর্মি পার্সোনেলের সাথে কথা বলতে মানা করল। একটু আগেই আমি এক আর্মির সাথে কথা বলে এসেছি পাসপোর্টও দেখিয়ে এসেছি, কিছুই বলে নাই।
এখানে এরা এখনো ফটোকপিকে জেরক্স কেন বলে আমি জানি না। জেরক্সের যুগ সেই কবেই শেষ হয়েছে। যাই হোক, আমাদের আরেক মরুভূমি মার্কা গ্রামে নিয়ে গেল ড্রাইভার। ফটোকপির দোকান আছে, কিন্তু তা বন্ধ। পরের গন্তব্য কাছাকাছি একটা রিসোর্ট। হোটেল-রিসোর্টের রিসেপশানে ফটোকপি মেশিন থাকেই সাধারণত। সেখানে ফটোকপি করে ব্যাক করলাম। এতক্ষণ খুব অলস সময় যাচ্ছিল। হঠাৎ মনে হল লাইফে এক্সাইটমেন্ট চলে এসেছে।
সল্ট ডেজার্টে নিয়ে যাবে যে বাসে করে, পুরো ব্যাপারটা বেশ প্রহসন মনে হল। বাস পুরো রাস্তা যাবে না, মাঝখানে নাকি আবার উটের গাড়িতে চড়তে হবে। তারা হয়ত সাধারণ মানুষের ইনকামের একটা ব্যবস্থা করে দিয়েছে। চাইলে পুরো রাস্তাই বাস যেতে পারত। বাস থেকে নামার পর আমরা উটের গাড়িতে না চড়ে হাঁটা শুরু করলাম। কোন একটা ইন্টারেস্টিং জায়গায় যাবার আগে একটা এক্সাইটমেন্ট কাজ করে, আমাদের এক্সাইটমেন্ট এমনিতেই অলরেডি বেশী। ডেজার্টের মাঝখানে সোজা রাস্তা, প্রথম অংশে দুই পাশে বালু, আর রাস্তার শেষ যেখানে তার আশেপাশে শুধু লবণ আর লবণ। আমাদের তর সইল না, রাস্তার শেষ অংশে পৌছানোর আগেই রাস্তা থেকে নেমে গেলাম। পায়ের নিচে বালু ছিল কিছুক্ষণ, আগাচ্ছি আর বালুগুলো হঠাৎ করে লবণ হয়ে গেল।
সাদা বালুর মত দেখতে লবণ।
এক এক অদ্ভুত ব্যাপার, আমি বরফের উপর হেঁটেছি এর আগে। লবণের উপরে হাঁটা অনেকটা বরফের উপর হাঁটার মতই, কিন্তু লবণ একটু বেশী নরম আর জুতার নিচে লেগে থাকে। আমাদের উদ্দেশ্য হল লোকজনের ভিড় থেকে দূরে যাওয়া। যতই দূরে যাচ্ছি চারপাশে শুধু সাদা লবণ আর লবণ। প্রত্যেকটা পা ফেলছি আর আমার মনে হচ্ছিল আমিই প্রথম মানব যে এখানে পা রেখেছে। আলম কিছু শোয়া ফটোগ্রাফি করল। কিন্তু ফোনে ঠিক মনমত হচ্ছিল না। আমরা দুইজনই হারানো ডি এস এল আর কে মিস করা শুরু করলাম। আলম গালি দিচ্ছিল ক্যামেরা চোরকে, তুই দোজখে যাবি, তোর কোনদিন বাচ্চা হইব না, এই ক্যামেরা দিয়া যার ছবি তুলবি সে মইরা যাইব।
দুইজন এবার লবণের উপর বসে পরলাম। মুন ক্যালেন্ডার দেখেছি, আকাশে চাঁদ উঠবে রাত ১২ টার দিকে। এখানে চাঁদ দেখা গেল মন্দ হত না। একটু পরেই সূর্য্য ডুবে যাবে। এই সাদা মরুভূমির মনে হয় কোন শেষ নাই। মানুষ মাঝে মাঝে অদ্ভুত কিছু স্বপ্ন দেখে। সে এমন একটা জায়গায় আটকে গেছে, চারপাশে যতদূর তাকানো যায় আর কেউ নেই, কিছু নেই। শুধু সাদা মরুভূমি। এটা যদি স্বপ্ন হয়, মন্দ হয় না। এখানেই আটকে থাকি। কি দরকার আবার সেই টাকা ইনকামের ধান্দা, লাইফে সেটেলড হবার চিন্তা, হাজারো সম্পর্কের কমপ্লেক্সিটি, থাক না দূরে সব কিছু। আজ মাথার সব চিন্তাকে সাদা রঙ করে দিলাম।
লবণের দানা। খেতে নোনতা, টেস্ট করে দেখেছি।


শোয়া ফটোগ্রাফিঃ সাইড ভিউ

শোয়া ফটোগ্রাফিঃ টপ ভিউ।

বসা ফটোগ্রাফিঃ সিরিয়াস আলোচনা ভিউ।
সাদা চিন্তাকে আবার কালো করে দিল আমাদের ড্রাইভার। ফোন দিল সে আমরা ব্যাক করছি কিনা। তার এখানে আসার অনুমতি ছিল না। আমরা জানালাম এক্ষুনি ফিরছি। ফেরার পথে এবার না হয় উটের গাড়ি ট্রাই করে দেখি, খারাপ হবে না বিষয়টা। উটের চলার মধ্যে এক ধরণের ছন্দ আছে, সমান বিরতিতে দুলুনি দিতে থাকে। যেখানে আমাদের গাড়ি রাখা ছিল সেখানে পৌছানোর পর আমাদের ড্রাইভার জানাল আমরা এত লেইট করছি কেন? আমাদের আতংকবাদী হিসেবে বসিয়ে দিবে। ড্রাইভারের ভাষায়, একটু আগে এখানে দো বাংগাল লোগোকো বেঠা দিয়া। বাংলায়, দুইজন বাংলাদেশীকে বসিয়ে দিয়েছে। আমরা ভাবলাম কি অদ্ভুত ব্যাপার! বেড়াতে এসেছে লোকজন, তাদের বসিয়ে দিবে কেন? আসলে কিছুই না, সে দ্রুত বাড়িতে ফিরতে চায় আমাদের ভয় দেখিয়ে। কিন্তু আমরাও তো সহজে ছাড়ব না। জানালাম, আমাদের প্রচন্ড খিদা লেগেছে, আমরা টেন্ট সিটিতে গিয়ে খাব। বেচারা আবারো হতাশ হয়ে বলল, দ্রুত খাবেন, যাতে কেউ টের না পায়। খুব অদ্ভুত ফিল হচ্ছিল, এই বেটা আমাদের পলাতক আসামীর মত ফিল করানোর চেষ্টা করছে।
যাই হোক, আমরা যত সম্ভব আস্তে আস্তে খাই, লাইব্রেরীতে ঘুরি, একটা প্রদর্শনী টাইপ হচ্ছে সেখানে ঘুরে বেড়াই। অবশেষে গাড়িতে ফিরলাম যখন, ড্রাইভার বেশ বিরক্ত। সে হয়ত ভেবেছিল আজকে বাসায় তাড়াতাড়ি ফিরবে, বউয়ের সাথে রোমান্টিক সময় কাটাবে। আমরা দুইজন সিংগেল যুবকের কি এই জিনিস সহ্য হয়! ড্রাইভার আমাদের বলতে লাগল এখানে বাংলাদেশীদের খুব ঝামেলা করে, আর মোহামেডান হলে তো কথাই নাই। একটু সময় লাগল আমার বুঝতে, মোহামেডান মানে মুসলমান। আলম জানাল, আমি মোহামেডান না, আমার মাসি-পিসী অনেক কিছু আছে এই দেশে, আমার কোন ভয় নাই।
ফুড কোর্ট। টেন্ট সিটির মূল অংশে প্রবেশ নিষেধ, যারা বিভিন্ন প্যাকেজ নিয়ে থাকবে শুধু তাদের জন্য ঐ জায়গা।

সেদিন রাতে হোটেলে কাটিয়ে ভোরবেলা বাসে করে রওনা দেই আহমেদাবাদের উদ্দেশ্যে। সেই একই বাস, যেটাতে আলমের ক্যামেরা চুরি হয়েছে।
এবার জার্নি দিনের বেলা, রাতের বেলা জার্নি করলে কিছুই দেখা যায় না। ভুজ থেকে বের হলে কিছু পাহাড়-টাহাড় দেখা যায়। দূরে দুই একটা ঝর্ণাও দেখেছি। কিন্তু অধিকাংশ জায়গায় ল্যান্ডস্কেপ খুব বোরিং। দেশে ট্রাভেল করার সময় রাস্তার দুই পাশে যেমন ধানক্ষেত দেখতে দেখতে বিরক্ত হয়ে যাই, এখানে দুই পাশে মরুভূমি টাইপ ল্যান্ডস্কেপ দেখতে দেখতে বিরক্ত হয়ে যাই। বাসে ম্যুভি প্লে করেছে। আমাদের প্ল্যান ছিল একটা সিনেমা হলে “জলি এল এল বি” ম্যুভিটা দেখব। দোয়া করছিলাম যেন এই ম্যুভি ছেড়ে না বসে। ছাড়ল হৃত্বিক এর কাবিল, দেশী ডেয়ারডেভিল। আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকাই। আমি খোলা জানাল, তুমি ঐ দখিনা বাতাস। এসি বাসে দখিনা বাতাস ঢুকে না।ঐখানে বিশাল এলাকা জুড়ে অনেক গুলো উইন্ড টারবাইন। টারবাইনের ব্লেডগুলো এত বড় হবে ভাবি নাই। ব্লেডগুলো ঘুরতে থাকে আর আমার চোখ সেটা ফলো করে ঘুরতে থাকে। শেষে আমার মাথা ঘুরতে থাকলে ব্লেড ফলো করা বাদ দিলাম। গুগল ম্যাপে দেখি আমরা মোটামোটি সাগরের পাশে দিয়ে যাচ্ছি। এর প্রমান পেলাম রাস্তার এক পাশে লবণের স্তূপ দেখে। পুরো আহমেদাবাদ দেখি লবণময়। আহমেদাবাদ পৌছে কি কি দেখব তা মার্ক করে রাখি গুগল ম্যাপে।
উইন্ড টারবাইন। সম্ভব হলে বাস থামিয়ে ছবি তু্লতাম, সম্ভব ছিল না।

সাদা লবণের স্তূপ। একটু পরেই আয়োডিন মিক্স করে প্যাকেট করবে।
আহমেদাবাদ পৌছে প্রথম কাজ খাওয়া, দ্বিতীয় কাজ সবরমতি আশ্রমে যাওয়া। সবরমতি নদীর তীরে গান্ধীজীর আশ্রম, যাদুঘর টাইপ জায়গা। আমরা টায়ার্ড ছিলাম। আশ্রমের ভেতর একটু ঘুরে টুরে নদীর পাড়ে গিয়ে বসি। এখানে নদীর পাড় পুরাটাই বাঁধানো, ন্যাচারাল কোন ব্যাপার নাই। খুব টায়ার্ড ছিলাম, গাছে বেজীগুলোর উঠা-নামা দেখে সময় কাটাচ্ছিলাম। আলম পিছনে তাকাতে বলল। দেখি সদ্য বিবাহিত দম্পতি, সাথে আরো কিছু লোকজন নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। জামাই লম্বা শেরওয়ানী পরেছে, গলায় টাকার মালা ঝুলছে, বউ বিয়ের শাড়ি পরা, দুনিয়ার অলংকার। সাথে বরযাত্রী মার্কা ৪-৫ জন বেশ ফিটফাট। আমি ভাবলাম নবদম্পতি গান্ধী আশ্রমে কি করে! নিশ্চই গান্ধী বাবার দোয়া নিতে এসেছে, সারাজীবন যাতে অহিংসাবাদী থাকতে পারে। লোকজন বিয়ের পর হানিমুনে সাগর দেখতে যায়, এরা যাদুঘর দেখতে আসছে, বেশ জ্ঞানপিপাসী দম্পতি হবে।
সবরমতি আশ্রমের ভিতরে। দুঃখের বিষয় এই পুলে নামা যাবে না।

গান্ধীজির ব্যবহৃত চড়কা।
আশ্রম থেকে আমরা জৈন মন্দিরে যাই, জামে মসজিদে যাই, তেমন বেশী ইন্টারেস্টিং না। আমরা এর মধ্যে অটো ভাড়া কেমন হবে রপ্ত করে ফেলেছি। আর কেউ ঠকাতে পারবে না। আমরা একটা শপিং সেন্টারে ঘুরতে যাই। বিগ বাজারে ঘুরি আর পোলো শার্ট পছন্দ হয়, টিশার্ট আর জার্সি পছন্দ হয়, কিন্তু কিনতে পারি না। আলম তার ক্রেডিট কার্ডটাকে খুব মিস করে। আমি ওর ক্রেডিট কার্ডটাকে ওর চেয়েও বেশী মিস করি। শেষে বিরক্ত হয়ে কানকারিয়া লেকের পাড়ে গিয়ে বসে থাকি। লেকটা পুরোপুরি গোলাকার, লোকজনে ভর্তি। আলম বলে, শালা কি জায়গায় আসলাম, ২৬০০ কিলোমিটার দূরে এসে জিয়া উদ্যানে বসে আছি।

আর্কিটেকচারে দন্ডাকৃতি জিনিসের অনেক চাহিদা।

জামে মসজিদ। ভিতরে জুতা নিয়ে প্রবেশ নিষেধ ছিল, আর জুতা ছাড়া গরম মোজাইকের উপর হাঁটা সম্ভব ছিলনা।

কানকারিয়া লেক। ডিঙ্গি নৌকা চালাতে ইচ্ছা হয় এরকম পানি দেখলে।
লেকের পাড়ে বিনোদনের ব্যবস্থা, বিভিন্ন রাইড। তার মধ্যে একটা রাইড খুব মজার। বেলুনের মত একটা ট্রান্সপারেন্ট জিনিসে দুই একজন লোক বসিয়ে দিয়ে লেকে ছেড়ে দিবে। বেলুনটা সাইজে অনেক বড়, আর সিলিন্ডার বা গোলাকৃতি। বাচ্চা পোলাপান এর ভেতর ঢুকে ব্যালেন্স রাখার চেষ্টা করে, পারে না। একজন পা দিয়ে আগানোর চেষ্টা করে আরেকজন ভেতরে উল্টে পড়ে যায়। বাচ্চাগুলো হেসে কুটিকুটি হয়ে যায়। এদের দেখে আমাদের একটু রিলাক্স ফিল হয়।
পরবর্তী গন্তব্য ভিন্টেজ কার মিউজিয়াম। লেক থেকে অনেক দূর, কিন্তু এয়ারপোর্টের কাছে। অটো ভাড়া করে চলে গেলাম। ড্রাইভার জানাল আমাদের নাকি ওখানে এক-দেড় ঘন্টার মত লাগবে। আমি ভাবলাম মিউজিয়ামে আধা ঘন্টার বেশী জীবনেও টিকব না। I was wrong. প্রায় দুই ঘন্টা থাকি ঐখানে।
মিউজিয়ামে এন্ট্রি ফির পাশাপাশি ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলার জন্য আলাদা একশ রুপি দিতে হবে। ভাবলাম, কোন ছবি তুলব না, একশ রুপি বেঁচে যাবে। অনেক বড় ভুল ছিল। ভিতরে গাড়ি দেখে মাথা নষ্ট। আবার গেটে ফেরত গেলাম, ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলার টিকেট নিয়ে আসলাম। হয়ত এত ছবি তুলতাম না, কিন্তু টাকা দিয়েছি বলে নাকি বেশী ভাল লেগেছে জানি না, তিন চারশ ছবি তুলে ফেললাম আমার ফোনে। Ford 1920, FIAT 1924, AUSTIN 1928, JAGUAR 1959, MORS, HUDSON, CADILLAC, 1933 CHEVROLET, 1923 ROLLS ROYCE সবকয়টার সামনে ছবি নিয়েছি। চাইলে চালানোও যেত কয়েকটা গাড়ি, কিন্তু চালাতেই তো পারি না।

মার্সিডিজ। কত সালের ভুলের গেছি।

ক্যাডিলাক, ১৯৫৮।
আহমেদাবাদ থেকে রাতের ফ্লাইটে গোয়া যাব। আমার এখনো আমাদের প্রথম কক্সবাজার যাবার কথা মনে আছে। একজন একজন করে ট্রেন স্টেশনে আসছে আর একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরছি। একটু পরেই ট্রেন ছাড়বে, হই হল্লা, গল্প। প্লেনে আমাদের পিছনে একটা গ্রুপের মত ছিল। প্লেন টেক অফ করার সময় তারা উউউউ বলে চিৎকার শুরু করে। আমরা দুইজন হঠাৎ করে একটু বড় হয়ে গেছি ফিল করি। কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই।


গ্র্যাভিটি হিলঃ
একটা কাগজে একটা সরলরেখা আঁকি, এমনভাবে যেন আমার কাছে আমার সাপেক্ষে সেটা মোটামোটি সোজা মনে হয়। এবার কাগজটা যদি একটু ঘুরিয়ে ধরি, সরলরেখার একপাশ নিচু মনে হবে, আরেকপাশ উঁচু। এতে কিন্তু সরলরেখার অরিজিনাল অবস্থানের কোন পরিবর্তন হয়নি, শুধু আমি কিভাবে দেখছি তার উপর নির্ভর করে এক পাশ উঁচু, এক পাশ নিচু মনে হচ্ছে। গ্র্যাভিটি যেভাবে কাজ করে সে অনুযায়ী, পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে থাকা বস্তু সেইদিকে গড়িয়ে যাবে যেদিকে পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে দূরত্ব তুলনামূলকভাবে আরেকটু কম। গ্র্যাভিটি হিলেও একই জিনিস হয়, কিন্তু আমাদের এক ধরণের অপটিকাল ইল্যুশনের কারণে মনে হয়, আসলে গাড়ি উঁচু জায়গার দিকে গড়িয়ে যাচ্ছে, গ্র্যাভিটির বিরুদ্ধে। যদিও সেই জায়গাটা আসলে নিচু হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আশেপাশে উপযুক্ত রেফারেন্স এর অভাবে যেদিক নিচু হয়ে যাচ্ছে সেইদিকটাকেই উঁচু মনে হয়। দেয়ালে বাঁকা হয়ে ঝুলে থাকা একটা ছবি আমি যদি ক্যামেরা দিয়ে বাঁকা করে ছবি তুলি, তাহলে সেটাকে ক্যামেরার স্ক্রিনে সোজাই মনে হবে। কিন্তু সিলিং কিংবা ফ্লোর সহ যদি ছবি তোলা হয় তখন বুঝা যাবে যে ছবিটা আসলে বাঁকা। আমি কতটুক বুঝাতে পেরেছি জানিনা। ব্যাক আপ হিসেবে একটা ভিডিওর লিংক দিয়ে দিচ্ছি। এটা দেখলে বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে।

                 
                          ++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++

ঢাকা - কোলকাতা বাস সার্ভিস
GOLAM MOULA·MONDAY, JANUARY 9, 2017
 Credit goes to (http://www.online-dhaka.com/)
কম খরচে ভেঙে ভেঙে কিভাবে যাওয়া যায়:
প্রথমে আপনাকে যশোরের বেনাপোল বন্দর পর্যন্ত যেতে হবে যেকোনো যশোর গামী বাসে। খরচ পড়বে ৫০০ টাকা। এরপর বেনাপোল বন্দরে ইমিগ্রেশন ও ট্রাভেল ট্যাক্স দিয়ে হেঁটে পার হন নোম্যানস ল্যান্ড এবং প্রবেশ করুন ভারতীয় ইমিগ্রেশন দপ্তর হরিদাসপুরে (পেট্রাপোল)। সেখানে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে অটোরিকশায় ২৫ রুপি ভাড়া দিয়ে চলে যান বনগাঁ স্টেশন। এরপর ২০ রুপির টিকিট কেটে চলে যান শিয়ালদহ স্টেশনে। সেখান থেকে ১৮ রুপির টিকিট কেটে চলে যান দমদম। এখান থেকে মেট্রোয় ১০ রুপি দিয়ে টিকিট কেটে চলে যান পার্ক স্ট্রিট। ভয় পাবেন না। যেকোনো প্রয়োজনে সাহায্য নিন পুলিশের।

BRTC আন্তর্জাতিক বাস সার্ভিস

আজকাল আধুনিক উন্নত যাত্রীদের আরামদায়ক সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক বাস সার্ভিস চালু হয়েছে। এর মধ্যে BRTC আন্তর্জাতিক বাস সার্ভিস অন্যতম। ১৯৯৯ সালে BRTC আন্তর্জাতিক বাস হিসেবে যাত্রা শুরু করে।
প্রধান কাউন্টারের ঠিকানা ও যোগাযোগ
BRTC বাস ডিপো,কমলাপুর,ঢাকা। কমলাপুর বুকিং নাম্বরঃ +৮৮-৮৩৫০২৪১।
কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সোজা পশ্চিমে ৫০ গজ।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
প্রধান টিকেট প্রাপ্তিস্থানঃ
আন্তর্জাতিক বাস ডিপো,কমলাপুর,ঢাকা
ফোন- +৮৮-০২-৯৩৫৩৮৮২, মোবাইল: +৮৮- ০১৭৪৯-৯৩৭৫৪৫
ফোন-+৮৮- ৮৩৬০২৪১
মোবাইল:+৮৮- ০১৭১৬-৯৪২১৫৪
বুকিং এবং টিকেট ক্রয়ঃ
এই বাস কোম্পানীতে অনলাইনে টিকেট কাটার ব্যবস্থা নেই। সরাসরি কাউন্টারে টিকেট কাটার জন্য যেতে হবে।
বুকিং দেওয়ার জন্য যোগাযোগ নাম্বারঃ +৮৮-০১৭৪৯-৯৩৭৫৪৫, ফোন-+৮৮-০২- ৯৩৫৩৮৮২
টিকেট কেনার জন্য অবশ্যই পাসপোর্ট নিয়ে যেতে হবে। আসল পাসপোর্ট নিলে ফটোকপির দরকার হয় না। টিকেট কেনার জন্য আসল ভিসা বা ফটোকপির দরকার হয় না।
এসি এবং নন এসি বাসগুলোর তথ্য সমূহ:
এই বাস কোম্পানীতে অগ্রীম রিজার্ভেশনের নিয়ম হল:
এক মাসে আগেও রিজার্ভেশন দেওয়া হয়। তবে কমপক্ষে ৩ দিন আগে রিজার্ভ দিতে হয়।
টিকেট ফেরতের শর্তাবলী হল কমপক্ষে ৩৬ ঘন্টা আগে জানাতে হবে বা সরাসরি কাউন্টারে আগে বলতে হবে। তবে ১০% কাটা যাবে।
সাধারণত এই কোম্পানীতে বাসের টিকেট নিতে হয় সিরিয়াল অনুযায়ী লাইন ধরে।
এই বাস কাউন্টারের টিকেটিং সিস্টেম হল ম্যানুয়াল।
এই বাস সার্ভিসে রিটার্ন টিকেট কাটা যায়। তবে কোলকাতা থেকে কনফার্ম করতে হয়।
বাসের ধরণ
এই বাস কোম্পানীর বাসগুলো ৪০ সিট বিশিষ্ট। সব সিটের টিকেট মূল্য একই।
এই কোম্পানীতে যে যে ব্রান্ডের বাস ব্যবহার করা হয়- BRTC শ্যামলী পরিবহন World Class RM-2 এবং সোর্হাদ্য বিলাসবহুল VOLO মার্ক-৩ সব বাসই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।
বাসের সার্ভিস বা সেবার ধরন:
যাত্রীদের সুবিধার জন্য সকালে নাস্তা খাবার পানীয় ব্যবস্থা করে বাস কর্তৃপক্ষ। শীতের সময় যাত্রীদের কম্বল দেওয়া হয়।
বিনোদনের ব্যবস্থা হিসাবে এলসিডি মনিটর টিভি সিডি থাকে।
ওয়েটিং রুমে যাত্রীদের বসার ব্যবস্থাসহ বিনোদনের জন্য টিভি রয়েছে। মোটামুটি ১০০ জনের ব্যবস্থা রয়েছে। এবং টয়লেট মহিলা ও পুরুষদের জন্য আলাদা মোট ৮ টি টয়লেট রয়েছে।
যাত্রীদের মধ্যে যাদের বমি হয় তাদের জন্য পলিথিনের ব্যবস্থা করা হয়।
বাসের ভেতরে গোলমাল ও ধূমপান নিষিদ্ধ।
যাত্রীকে বর্ডার ব্যাংক (সোনালী ব্যাংক) Travel Tax দিতে হয়। ইমিগ্রেশন এর জন্য পাসপোর্ট ইমিগ্রেশন সিল করতে হয়।
এই বাসগুলোতে কুলি,ভ্যান,রিক্সা দরকার হয় না। বাস স্টাফ সবকিছু বহন করে।


ছেড়ে যাওয়ার সময়সূচী
ঢাকা থেকে ছাড়ে BRTC সোম,বুধ,শুক্র সকাল ৭.৩০ মিঃ
সোর্হাদ্য- শনি,মঙ্গল,বৃহঃ সকাল ৭.৩০ মিনিট
কোলকাতা থেকে ছাড়ে- BRTC শনি,মঙ্গল,বৃহঃ সকাল ৭.৩০ মিঃ
কোলকাতা থেকে সোর্হাদ্য- সোম,বুধ,শুক্র সকাল ৭.০০ মিঃ
যে যে গন্তব্যে বাস সার্ভিস চালু আছে
ঢাকা থেকে কোলকাতার করুনামেয় (সল্টটেক)
ঢাকা থেকে ভারতে নামানো হয়- করুনাময়,সল্টটেক,কোলকাতার নিউ মার্কেটে।
প্রক্রিয়া
এই বাসগুলোর চেক আপ হয় সীমান্ত কাস্টমস চেক আপ সীমান্ত অফিসে। আর অন্য কোন জায়গায় চেক আপ হয় না।
যাত্রীদের খাবার জন্য ২০ মিনিট মাগুরায় থামানো হয়।
সীমান্তে কোন বাস বদল করা হয় না। কারণ এই বাসগুলো সরাসরি কোলকাতায় যায়।
সাধারণত এই বাসগুলোর বাংলাদেশ বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সার্ভিস চালু আছে।
শহরের ভিতর এবং অন্য কোন জায়গা হতে যাত্রীদের নিজেদেরই কাউন্টারে আসতে হয়।
যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য বাসে দুইজন গানম্যান এবং আনসারের ব্যবস্থা রয়েছে।
এই কোম্পানীর সকল বাসগুলো বীমাকৃত।
মালপত্র পরিবহন:
একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ২২ কেজি মালপত্র নিতে পারে। এর বেশী হলে ১০০ টাকা করে চার্জ দিতে হয়।
যাত্রাকালে মাল যাত্রীর দায়িত্বে থাকলে তা যদি হারিয়ে যায় তবে বাস কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেনা। আর যদি  বাস কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে থাকা মাল হারিয়ে যায় তবে বাস কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ দিবে।
লাগেজ পরীক্ষা করা হয়।
সুবিধাঃ
সাধারণত এই বাসগুলোতে কোন শিশু ও মহিলা এবং প্রতিবন্ধী মুক্তিযোদ্ধার জন্য কোন সিট বরাদ্দ থাকে না।
গাড়ির অভ্যন্তরে যাত্রীদের সুবিধার জন্য এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করা হয়।
মুদ্রা বিনিময়ঃ
কোলকাতার বাস কোম্পানীর তরফ থেকে মুদ্রা বিনিময়ের জন্য করুনাময় কাউন্টারে মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থা রয়েছে।
বাস ছাড়ার আগে যদি যাত্রী না আসে এবং দেরী করে আসে সেক্ষেত্রে বাস কর্তৃপক্ষ বাস ছেড়ে দিলে কোন টাকা ফেরত দেয় না। কারণ বাস নির্ধারিত সময়ে ছাড়ে।
অত্যাধুনিক সুবিধা সম্পন্ন এই বিলাস বহুল গাড়িতে রয়েছে। ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম,অরিজিনাল ২ টা LCD মনিটর। বিশ্বের উন্নত প্রযুক্তি সংযুক্ত এয়ার সাসপেনশন সিস্টেম,যা গাড়িকে সার্বক্ষনিক ঝাঁকুনিমুক্ত রাখতে সহায়তা করে।
এছাড়া নিয়মিত ঢাকা-শিলিগুঁড়ি-ঢাকা-আগরতলা রুটে স্বনামধন্য শ্যামলী পরিবহন তার সার্ভিস পরিচালনা করে আসছে।

শ্যামলী পরিবহন

ঢাকা-কোলকাতা আন্তর্জাতিক বাস সার্ভিসের মধ্যে শ্যামলী পরিবহন অন্যতম। যাত্রীদের আরামদায়ক পরিবহনের জন্য তারা RM2 এবং VOLVO ব্রান্ডের বাস ব্যবহার করে থাকে। যাত্রীদের সুবিধার জন্য অনলাইনে টিকেটের ব্যবস্থাও তারা রেখেছে। এটি ১৯৯৯ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক সার্ভিস শুরু করে।
প্রয়োজনীয় তথ্য:
প্রতিদিন সকাল ১১ টায় বাস ছেড়ে যায়। সাপ্তাহিক বন্ধ শুক্রবার।
মোট আসন সংখ্যা ৪০ টি। সকল সিট একই মূল্যের। যাত্রী প্রতি ভাড়া ১৪০০ টাকা।
টিকেট কিনতে পাসপোর্ট নাম্বার লাগে। পাসপোর্টের ফটোকপি লাগে না।
কমপক্ষে ৩ দিন আগে রিজার্ভ করতে হবে টিকেট। যদি ফেরত দিতে হয় তবে সেক্ষেত্রে ১০% হারে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। টিকেটিং সিস্টেম কম্পিউটারাইজড। রিটার্ন টিকেট কাটা যায়। ট্রাভেল ট্যাক্স সোনালী ব্যাংকের যেকোন শাখায় দিতে পারবেন।
বাসে খাবার পানীয় ও সকালে নাস্তার ব্যবস্থা রয়েছে। বিনোদনের জন্য DVD ও সাউন্ড বক্স রয়েছে। সব বাসেই AC রয়েছে।
এদের রয়েছে সুবিন্যস্ত ওয়েটিং রুম । পুরুষ ও মহিলাদের জন্য রয়েছে আলাদা টয়লেট ।
বাসের মধ্যে ধূমপান করা নিষিদ্ধ। যাত্রীদের মধ্যে যারা বমি করে তাদের জন্য পলিথিনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
ভারতের অভ্যন্তরে বারাসাত ও সল্টলেকে যাত্রী নামানো হয়। ভারতেও এদের কাউন্টার রয়েছে।
শুধুমাত্র বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে যাওয়া যায়। যাত্রীদের নিজ দায়িত্বে কাউন্টারে আসতে হবে।
বাংলাদেশের বেনাপোল এবং ভারতের হরিদাসপুরে কাস্টমস চেক আপ করা হয়। সাধারণত ৩০ মিঃ সময় লাগে। বাস বদল করতে হয় না। মাগুরাতে ২০ মিঃ যাত্রা বিরতি দেয়া হয়।
খাওয়া দাওয়ার জন্য ভিডিও চিত্র নেওয়া হয় না।
দূর্ঘটনার ক্ষেত্রে কোম্পানী যাবতীয় ক্ষতিপূরনের ব্যবস্থা করে থাকে।
একজন যাত্রী আলাদাভাবে সর্বোচ্চ ২০ কেজি ওজনের মালপত্র নিতে পারবে।
অতিরিক্ত ওজনের হলে প্রতি কেজি ৩০ টাকা হারে অতিরিক্ত টাকা প্রদান করতে হবে।
ঢাকায় লাগেজ পরীক্ষা করা হয়। ব্যাগ হারালে শ্যামলী কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ প্রদান করে থাকে।
যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য বাসের ভেতরে দুজন আনসার সদস্য অস্ত্রসহ অবস্থান করেন।
আলাদা কোন সার্ভিস নেই। রোগীদের জন্য বাসের ভেতরে First Aid এর কোন ব্যবস্থা নেই। এবং আলাদা সিটেরও কোন ব্যবস্থা নেই। কোম্পানীর তত্ত্বাবধানে থাকার কোন ব্যবস্থা নেই।
এরা মুদ্রা বিনিময়ের ক্ষেত্রে কোন প্রকার সাহায্য করেন না।
যাত্রীদের ক্ষেত্রে বিশেষ কোন নির্দেশাবলী নেই। বাসের অভ্যন্তরে সমস্ত তথ্য দেয়া রয়েছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
Web: www.shamoli.poribahan.bd.com
Kolkata Office:
6/1, Marquis Street
Tel: 00913339579672, 22520693
2Zakaria Street Kolkata 73
Tel: 22342995
Karunamoye, Salt lake,
Tel: 9748090471, Mob: 0091-9748090471
ঢাকা অফিস
১৬৭/২১ ইনার সার্কুলার রোড
ফোন- ৭১৯৩৯১০, ৭১৯৪২৯১
মোবাইল- ০১৭১৬-৪১৬৮৩১
পান্থপথ: ফোন- ৯১০২০৮২, মো: ০১৭১১-০৪০৮৮১
১/১৬ আসাদগেট, ঢাকা
ফোন- ৮১২৪৮৮১, ৯১২৪৫১৪
১২ দক্ষিণ কল্যাণপুর মিরপুর রোড
ফোন- ৮০৩৪২৭৫, মো: ০১৭১৬-৪৭৮৯৫১
নারায়ণগঞ্জ অফিস
বিবি রোড, স্কাউট ভবনের পাশে
ফোন: ৭৬৪২৮৮২
বেনাপোল ও চেকপোষ্ট:
মোঃ ০১৭২৪-৭৭৭২৬০
বুড়ীমারী চেকপোষ্ট:
মোঃ ০১৭১৬-১৯৩১১৪

গ্রীন লাইন

ঢাকা কলকাতা সার্ভিস
কলকাতা এসি বাস ভাড়া- বিজনেস ক্লাস ১২৫০ টাকা বেনাপোল পর্যন্ত ওপার থেকে কলকাতা পর্যন্ত ২৫০ টাকা। মোট- ১৫০০ টাকা।
প্রয়োজনে কাউন্টারের পিয়ন দ্বারা ট্রাভেল ট্যাক্স, বর্ডার, কুলি, ভ্যান, রিক্সা, ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়।
ভিসার বৈধতা সাপেক্ষে ও ভ্রমণের অনুমতি সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদির ভিত্তিতে রিটার্ন টিকেট প্রদান করা হয়।
বাসের ব্র্যান্ড
এসি SCANIA ও VOLVO
টিকেট ক্রয় ও বুকিং
টিকেটিং সিস্টেম হল কম্পিউটারাইজড।
কাউন্টারের সংশ্লিষ্ট নম্বরে সিট থাকা সাপেক্ষে দেওয়া হয়। তবে, যাত্রার ৬ ঘন্টা আগে টাকা পরিশোধ করতে হয়।
কমপক্ষে ৬ ঘন্টা আগে অবগত করতে হবে এবং যুক্তি প্রদর্শন সাপেক্ষে ফেরত দেওয়া যায়।
 বুকিং নম্বর :  ০১৯৭০-০৬০০০৪, ০১৭৩০-০৬০০৪, ৮৩৩১৩০২-৪, ৮৩৫৩০০৪-৫

সোহাগ পরিবহন

 ঢাকা – কোলকাতা রুটের বাসগুলো মালিবাগ ও আরামবাগ থেকে ছেড়ে যায়।

ঢাকা – কলকাতা:
এসি: বিজনেস ক্লাস= ১,৫২০/-, রেগুলার ক্লাস= ১,৩২০/-, নন-এসি= ৬৭০/-
 এছাড়া বর্ডার অতিক্রম করার পর এসি বাসের ক্ষেত্রে যাত্রীদের আলাদা ২৪০ রুপি এবং নন-এসি বাসের ক্ষেত্রে যাত্রীদের ১৭৫ রুপি করে পরিশোধ করতে হয়।
 ১৬৭/৩, ইডেন গার্ডেন কমপ্লেক্স, আরামবাগ, ঢাকা। ফোন: ৭১০০৪২২

১১৪, মালিবাগ ডিআইটি রোড, ঢাকা। ফোন: ৯৩৪৪৪৭৭, মোবাইল: ০১৭১১-৬১২৪৩৩

++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
পুলিশের দ্বারা যে কোন হয়রানি হলে অভিযোগ কুরুন।

সকল জন সাধারনের দৃষ্টি আকর্ষন করছি আপনাদের প্রতি অনুরোধ রইলো পুলিশের যে কোন পদবীর কর্মকর্তা ও কর্মচারীগন বা পুলিশের সিভিল স্টাফ যদি সাধারণ জনগণ বা অন্য পুলিশ সদস্যদের সাথে খারাপ ব্যাবহার করে বা ঘুষ চায় বা হয়রানি করে বা নির্যাতন করে বা এমন কোন কাজ করে যা আপনাদের মানসিক বা শারিরীক বা আর্থিকভাবে ক্ষতি হয়ে থাকে তাহলে উপযুক্ত প্রমাণাদি সহ নিম্নের ঠিকানায় অভিযোগ প্রেরণ করেন!!
এখানে অভিযোগকারীর নাম, ঠিকানা প্রকাশ করা হয় না!! অবশ্যই উপযুক্ত ফল পাবেন।।
(উল্লেখ্য বিষয় হচ্ছে এখানে শুধু মাত্র পুলিশের
বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো তদন্ত করা হয়। )
এ্যাডিশনাল ডিআইজ (ডিসিপ্লিন)
বাংলাদেশ পুলিশ
NC COM ভবন ( ৭ম তলা)
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স
ফিনিক্স রোড, ফুলবাড়িয়া, ঢাকা
ফোন - ৯৫৬১৮৪৬।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
Guideline Holidays Company Ltd.(Facebook Page)
অনেকেই থাইল্যান্ডে উন্নত চিকিৎসা সেবা, ভ্রমণ কিংবা ব্যবসা করতে আগ্রহী। কিন্তু নিয়ম কানুন না জানার কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা পোহাতে হয়। আর এসব বিষয়ে উন্নত ও মানসম্মত সেবা দিতে বিশেষ ছাড় দিচ্ছে গাইডলাইন হলিডে কোম্পানি।
সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, থাইল্যান্ডে কীভাবে হাসপাতালে বুকিং নিতে হয়, সেখানকার খরচাপাতি ও ভিসা প্রসেসিংসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা দেবে গাইডলাইন হলিডে। এ ছাড়া গাইডলাইন হেলথ কেয়ার সার্ভিস, ব্যাংকক ট্রাভেল এজেন্সি, গাইডলাইন ট্রেডিং লিমিটেড, ফ্যাশন এবং পোশাক, মাস্যাজ অ্যান্ড স্পা, থাই সিল্ক ও হস্তশিল্প, কসমেটিক পণ্যসহ ভিন্ন ভিন্ন সেবা দিবে প্রতিষ্ঠানটি।
বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ- গাইডলাইন হলিডে কোম্পানি লিমিটেড, ১৯/৯ সুকুমভিট স্যুট (নিচতলা), সুকুমভিট-১১, ব্যাংকক, থাইল্যান্ড। হটলাইন: +৬৬৯১১৮০৮৫০৮,+66911808508
++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট এখন অনলাইনে

একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ড-এর মাধ্যমে বিদেশে যেতে ইচ্ছুক নাগরিকদের জন্যে অনলাইনের মাধ্যমে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্যে আবেদন করবার সুযোগ তৈরি হল। এ উদ্যোগটি প্রাথমিক পর্যায় কুমিল্লা জেলা, চাঁদপুর জেলা ও সিলেট মেট্রোপলিটন এলাকায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আগামী ১৫ জানুয়ারি মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খাঁন এমপি রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন অডিটোরিয়ামে এই সেবাটি উদ্বোধন করবেন। অনলাইনে যে কেউ এই সিস্টেমে নিবন্ধন করে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে এই সেবার জন্যে আবেদন করতে পারবেন, ই-পেমেন্টের মাধ্যমে এই সেবার ফি পরিশোধ করতে পারবেন এবং যেকোনো মোবাইল থেকে এসএমএস নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানতে পারবেন। এই সেবা অনলাইনে আসার মাধ্যমে বিদেশে যেতে ইচ্ছুক নাগরিকেরা একটি স্বচ্ছ, সুলভ, সহজ এবং সময়সাশ্রয়ী প্রক্রিয়ায় তদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।

++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
'''আমার ট্রানজিট ভিসা প্রাপ্তি'''


জেনে রাখা ভালো ট্রানজিট ভিসার ব্যাপারটা, যথেষ্ট প্লান করে,টাইম মেনটেইন করে,করতে হয়।

কারণ ভিসার মেয়াদ থাকে ইস্যু ডেট থেকে ১৪/১৫ দিন।আর এম্বাসি ভিসা ইস্যু করে আপনার ট্রাভেল ডেট এর উপর নির্ভর করে।সেজন্য জমা দেয়া আর জার্নি ডেট এর মাঝে ।৯-১০ দিন গ্যাপ রাখা ভালো।

আর অন্যদিকে আপনি যদি ডলার এন্ড্রোস করেন,সেক্ষেত্রে আমি যেটা জানি ডলার- এন্ড্রোসের ১৫ দিনের ভিতর আপনার'এপ্লিকেশন: জমা দিতে হবে।

সুতরাং সব কিছু ঠিক সময়মত গুছিয়ে তারপর অনলাইনে'এপ্লিকেশন ফরম'ফিলাপ করেতার পরের দিনই জমা দেয়ার চেষ্টা করা ভালো।

এবার আসি আমরা কিভাবে করেছি সে বিষয়ে।

২২ এ ডিসেম্বর আমরা ডলার এন্ড্রোস করিমতিঝিলের জনতা ব্যাংক থেকে।

এরপর টিকেট কাটা নিয়ে একটা ঝামেলা হয়।ঝামেলা বলতে অনেকেই বলতেছিল শ্যামলী পরিবহণের 'রিটার্ন টিকেট' মাস্ট লাগবে।

অথচ আমি'ভিসা সেন্টারের'হেল্প লাইনে কথা বলে জেনেছি যে, শ্যামলী বা শিলিগুড়ি পর্যন্ত টিকেট বাধ্যতামূলক নয়,বরং বুরিমারী পর্যন্ত 'রিটার্ন টিকেট' দেখালেই হবে।

হেল্প লাইনের তথ্য অনুযায়ী আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, বুরিমারী পর্যন্ত রিটার্ন টিকেট জমা দিব।

যা হয় হবে!!!

তারপর....এস,আর পরিবহনের টিকেট কাটার জন্যে উত্তরায় তাদের কাউন্টারে গেলাম, সেখান থেকে জানালো উত্তরার কাউন্টার থেকে বুড়িমারীর আপ-ডাউন তথা রিটার্ন টিকেট ইস্যু করা হয় না।

কেমন এক ঝামেলায় পরলাম!!!!

পরে আমার বড় ভাইয়ের পরিচিত একজনের মাধ্যমে এস,আর পরিবহনের যাওয়া-আসা অর্থাৎ রিটার্ন টিকেটের ব্যবস্থা হল।

আলহামদুলিল্লাহ্‌।

২৮ তারিখ ছিলো আমাদের টিকেটের ইস্যু ডেট।

সেদিন সন্ধায় বসে অনলাইনে ইন্ডিয়ান'ভিসা ফরম' ফিলাপ করে নিলাম।

আমাদের জার্নি ডেট দিয়েছিলাম ৯ তারিখ।

আর হ্যা....

২/২ সাইজের ছবি আপলোড দিয়ে তারপর ফরম প্রিন্ট-আউট দিলাম।(ছবির ক্ষেত্রে সদ্য তোলা ছবি হতে হবে)

তারপর আমাদের এন,ও,সি পেপার গুলো ফরম্যাট অনুযায়ী রেডি করে নিলাম।

২৯ তারিখ গুলশান এম্বাসিতে গিয়ে বাকি কাগজপত্র সহ জমা দিয়ে আসলাম।


''জেনে নিন কি কি পেপার সহ আমরা জমা দিয়েছিলাম''


১।পাসপোর্ট।
(সাথে দুই সেট ফটোকপি,পূর্বের ইন্ডিয়ান ভিসা লাগানো থাকলে সেটার ফটোকপি সহ)।

২।অনলাইনে পূরণ করা ফরমের প্রিন্ট কপি।(ফরমের ডান সাইটে উপরের দিকে ছবি এটাচ করার একটা জায়গা আছে,সেখানে২/২ সাইজের একটা ছবি আঠা দিয়ে লাগিয়ে নিবেন)।

৩।পেইড বিদ্যুৎ বিলের অরিজিনাল কপি ও ফটোকপি।(লাস্ট তিন মাসের পেইড বিলের একটা দিলেই হবে)।

৪।এন,আইডি কার্ডের ফটোকপি।(জন্ম নিবন্ধন কপিও দিতে পারেন)।

৫।ডলার এন্ড্রোস কপি ও তার ফটোকপি। (পাসপোর্টের পিছনের দিকে এন্ড্রোসমেন্টের যে সীল লাগানো থাকে তার ফটোকপি)
(কেউ চাইলে ব্যাংক স্টেটমেন্ট ও দিতে পারেন)।

৬।এন,ও,সি পেপার অরিজিনাল ও তার ফটোকপি।(ভিসিটিং কার্ড বা আইডি কার্ডের ফটোকপি)-যদি থাকে।(ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি)।

৭।এস,আর পরিবহনের বুরিমারী পর্যন্ত রিটার্ন (আপ-ডাউন) টিকেট।(অরিজিনাল কপি ও ফটোকপি)।

(চাইলে শ্যামলী পরিবহনের টিকেট ও দিতে পারেন)।

>আমাদের টোকেনে ডেলিভারি ডেট দেয়া ছিলো
৫ তারিখ (বৃহঃবার)।
৫ তারিখ গিয়ে পাসপোর্ট পাইনি।
পরে গতকাল রবিবার (৮ তারিখ) এম্বাসিতে
গিয়ে পাসপোর্ট নিয়ে আসছি.....ভিসা সহ। :)

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
#ঘুরে_এলাম_সিঙ্গাপুর.. সিয়াম সিদ্দিকী ফাহিম

ভ্রমণপিয়াসী কারোর কাছে সিঙ্গাপুর স্বপ্নের শহর আবার কারোর কাছে রাতের শহর.. অনেকের কাছে দুটোই.... আমি সম্ভবত ৩য় গ্রুপের সদস্য.. অনেকের কাছে সিঙ্গাপুর মানেই অনেক খরচের শহর যার জন্য অনেকেই এই শহর থেকে নিজেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়.. আমিও ছিলাম সেই দলেরই... যাওয়ার আগে অল্প কিছু তথ্য ছিল আর ছিল গুগুল মামা... এই সম্বল নিয়েই রওনা হয়েছিলাম, যা হওয়ার পরে হবে চিন্তা করে... চেষ্টা করবো এই পোষ্টের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর সম্পর্কে কিছু ধারণা দেয়ার..

প্রথমে আসি ভিসার ব্যাপারে... আমি কি পাবো ভিসা?? কই থেকে কিভাবে এপ্লাই করবো নানা জনের নানা চিন্তা.... জ্বী ভাই ও বোনেরা আপনি পাবেন যদিও আপনাকে কিছু শর্ত পূরণ করা লাগবে..
১) অবশ্যই আপনার পাসপোর্ট ফ্রেশ হওয়া চলবে না..
২) মিনিমাম থাইল্যান্ড অথবা মালায়শিয়া কিংবা যে কোন উন্নত দেশ ভ্রমণের ভিসা থাকা লাগবে.. যাদের শুধুমাত্র ইন্ডিয়া, নেপাল বা ভুটান ভ্রমণ করা আছে তাদের ভিসা না হওয়ার সম্ভবনাই বেশী..
৩) এম্বাসি যেই ডকুমেন্টসগুলো চায় তা সেইভাবেই সাবমিট করা লাগবে..

এবার আসি কিভাবে কই থেকে এপ্লাই করবেন!!!
কিছুটা টাকা খরচ হলেও আমি বলবো ট্র্যাভেল এজেন্সি থেকে করাই ভালো.. কেননা আপনি নিজে করতে গেলে অনভিজ্ঞতার কারনে আপনার ভুল হওয়াটাই স্বাভাবিক.. এতে ভোগান্তিও কম হবে.. একেক এজেন্সি একেক ফী নেয়.. ৫০০০-৭০০০ টাকা তারা ভিসা ফী দাবি করে... এখন আপনি যেখান থেকে করাতে চান..

এবার আসি বিমান ভাড়া কেমন পড়বে..!!
বাংলাদেশ থেকে অনেক বিমানই যায় সিঙ্গাপুরে.. ডাইরেক্ট যায়- বাংলাদেশ বিমান, রিজেন্ট এয়ার, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স এবং টাইগার এয়ার.. আর ট্রানজিট হয়ে সিঙ্গাপুর যায়- মালিন্দো, এয়ার এশিয়া, এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস সহ আরও অনেক বিমানই.. ভাড়া একেক বিমানের একেক রকম তবে তা ডিপেন্ড করবে আপনার ভ্রমণ তারিখের উপর..
টাইগার= ২৮-২৯০০০/-
রিজেন্ট= ৩০-৩২০০০/-
এয়ার ইন্ডিয়া= ২৭০০০/- (আমরা এই প্রমোশনাল ফেয়ারে গিয়েছিলাম কোলকাতা ট্রানজিট হয়ে)

এবার আসি হোটেল বুকিং এর ব্যাপারে...
অনলাইনে বুকিং করাই অবশ্যই বুদ্ধিমানের কাজ.. আপনি হোটেলে গিয়ে বুকিং করলে আপনার ভাড়া অনেক বেশী পড়বে... আমরা ছিলাম হোটেল ক্ল্যারমন্টে.. আপনাদের এটাই রিকমেন্ড করবো এই জন্য যে এর ভাড়া তুলনামূলক কম, হাটা দূরত্বে পাবেন মোস্তফা মার্ট-সিটি মল-এমআরটি স্টেশন সহ আরও অনেক কিছুই... ট্যুরিস্টদের শপিং এর জন্য সিংগাপুরে মোস্তফা মার্টের কোন বিকল্প নেই... মোস্তফা মার্টকে ঘিরেই এই এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য বাংলাদেশী খাবারের দোকান.. এখানে থাকলে আপনার মনে হবে যেন আপনি বাংলাদেশেই আছেন.. একটা ব্যাপার যেটা আমার কাছে খুব বেশী ভালো লেগেছে তা হল ওদের GsT বা Goods and Services Tax ক্লেইম করার সুবিধা.. এর অর্থ হচ্ছে আপনি যদি কোন একটি বড় দোকান থেকে মিনিমাম ১০০ সিঙ্গাপুর ডলারের সমমূল্যের মালামাল ক্রয় করেন তখন কেনার সময় সরকারকে যেই পরিমাণ ট্যাক্স দিয়েছিলেন তা দেশে ফেরার পথে আপনি এয়ারপোর্ট থেকে ক্লেইম করে নিয়ে যেতে পারবেন... প্রতিটি মল বা মেগাশপেই ওদের জিএসটি কাউন্টার রয়েছে.. সেখান থেকে আপনি জিএসটি রিসিট নিয়ে দেশে ফেরার পথে এয়ারপোর্টে সেই রিসিট দেখিয়ে সিঙ্গাপুর ডলার নিয়ে যেতে পারবেন.. তবে শর্ত হচ্ছে অবশ্যই আপনাকে ট্যুরিস্ট হওয়া লাগবে এবং সেই দেশের ওয়ার্ক পারমিট বা পিআর থাকা যাবে না... আর জিএসটি রিসিট সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই পাসপোর্ট দেখাতে হবে আপনাকে..
সিংগাপুরে স্বর্ণের দাম তুলনামূলক কম.. সর্বোচ্চ ১০০গ্রাম স্বর্ণ কেনার কাগজ পত্র সহ আপনি বিনা ট্যাক্সে দেশে আনতে পারবেন.. এর বেশী হলে আপনাকে ট্যাক্স দেয়া লাগবে.. স্বর্ণ কেনার জন্য অবশ্যই কাউন্টারে আপনাকে পাসপোর্ট দেখাতে হবে..

এবার আসি কিভাবে ঘুরবেন..!!
ট্যাক্সি ভাড়া অনেক বেশী.. সব থেকে বুদ্ধিমানের কাজ হবে যদি আপনি এমআরটিতে ভ্রমণ করেন.. এই এমআরটি করে আপনি সারা সিঙ্গাপুর চষে বেড়াতে পারবেন.. অও আচ্ছা এমআরটি কি সেটাই তো বলা হল না... MrT বা Maas Rapid Transit হল সিংগাপুরের মেট্রো রেল ব্যবস্থা... অনেক উন্নত মানের এবং খরচ অনেক কম... এয়ারপোর্ট থেকে হাটা দূরত্বে ওদের এমআরটি স্টেশন... সেখানেই গিয়েই প্রথম কাজ হবে আপনার মাই এমআরটি কার্ড কিনে নেয়া... খরচ পড়বে ১২ সিঙ্গাপুর ডলার.. এর মাঝে ৫ ডলার সরকার ট্যাক্স হিসেবে কেটে নিবে.. আর ৭ ডলার দিয়ে আপনি ঘুরতে পারবেন.. শেষ হয়ে গেলে টাকা রিচার্জেরও ব্যবস্থা আছে..

যানজট বিহীন কোলাহল মুক্ত অত্যন্ত পরিষ্কার এবং গুছানো শহর সিঙ্গাপুর.. প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুঁজতে চাইলে আপনি হতাশ হবেন সিংগাপুরে.. তবে তারা নিজের ইচ্ছায় এবং চেষ্টায় সিঙ্গাপুরকে এতো সুন্দর করে সাজিয়েছে যে আপনি হয়তো ভুলেই যাবেন আপনার আফসোসের কথা.. কোথায় কোথায় ঘুরবেন, কিভাবে ঘুরবেন সেই পোষ্ট নিয়ে আসবো ইনশাআল্লাহ্‌ পরবর্তিতে.. আজকে আপাতত এই টুকুই থাক.. আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা দিয়ে চেষ্টা করলাম সিঙ্গাপুরের ব্যাপারে একটা বেসিক ধারণা দিতে.. পরবর্তী পোষ্টগুলোতে ট্যুরের বিস্তারিত জানাবো ইনশাআল্লাহ্‌.. এই পোষ্টের প্রাসঙ্গিক কিছু জিজ্ঞাসার থাকলে কমেন্টে জিজ্ঞাসা করবেন... চেষ্টা করবো উত্তর দেয়ার.. সাথেই থাকুন..

                                   ++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
#ঘুরে_এলাম_সিঙ্গাপুর_পার্ট_২
১ম পার্ট= http://bit.ly/2j4ZbFt

বিমান এক ঘণ্টা লেট হওয়ায় ৭.৩০ এর বদলে রওনা দেয়া লাগলো ৮.৩০ এ... পথে আধা ঘণ্টার ট্রানজিট কোলকাতায়... যদিও আমাদের নামা লাগেনি.... আর আমরা সিঙ্গাপুর গিয়ে পৌছালাম লোকাল টাইম রাত ৩.৩০মিনিটে... ওদের দেশে সূর্য উঠে সকাল ৮টায়... তাই সেই পর্যন্ত বসে থাকা... আকাশ কিছুটা সাদা হলে মেট্রো তে করে চলে আসলাম হোটেলে..

সিংগাপুরে এসে কিছুটা কনফিউজড ছিলাম কই থেকে শুরু করবো, কিভাবে শুরু করবো আর সেখানে যাবোই বা কিভাবে!!? এক বন্ধুর সম্পর্কে ভাগ্নে (বয়সে বড় তাই মামা ডাকা) সিংগাপুরে আছে প্রায় ৯ বছর!! উনি তার বন্ধুকে নিয়ে ২ দিনের ছুটি নিয়ে চলে এসেছেন শুধুমাত্র আমাদেরকে সিংগাপুর সিটি ঘুরিয়ে দেখাবেন বলে!! তার কথায় রওনা হলাম ম্যারিনা বে'র উদ্দেশ্যে!! সিংগাপুর শহরটি মেট্রো রেলের শহর!! ২-৩মিনিট পরপর একের পর এক মেট্রো এসে আপনাকে পৌছে দিবে বিদ্যুৎ গতিতে!! এভাবেই চলে আসলাম ম্যারিনা বে'তে!!

দেখলাম, ঘুরলাম & মুগ্ধ হলাম!! অবাক নয়নে ভেবেই গেলাম আজ থেকে ৩০-৪০ বছর আগে এই দেশ আমাদের থেকে কতটা পিছিয়ে ছিল আর আজ কি হলো!!!! জানিনা আগামী ৮০ বছরেও আজকের অবস্থানে যাওয়া সম্ভব হবে কিনা আমাদের!!!

ম্যারিনা বে তে রয়েছে হোটেল, শপিং মল, ফুড কোর্ট, ক্যসিনো সহ আরও অনেক কিছু.... আর ইনফিনিটি পুল তো আছেই তবে এর জন্যে আপনাকে গুণতে হবে বড় অঙ্কের টাকা.. ম্যারিনা বে'র রাতের লাইটিং ও লেজার শো দেখার জন্যই অনেক পর্যটক ভীড় করে এই মেরলিয়নের সামনে... চাইলে আপনি এখানে ছোট খাটো রিভার ক্রুসে সামিল হতে পারেন ওদের সাম্পানে..

ম্যারিনা বে'র পিছেই আছে গার্ডেন বাই দ্যা বে!! আর্টিফিশিয়াল গাছে লাইটিং করে এক অন্যরকমের ভালো লাগার অনুভূতি তৈরি করে যা নিজের চোখে না দেখলে বুঝা অসম্ভব...!! দিনের আলোতে এক ধরনের সৌন্দর্য আর রাতের আলোতে আরেক ধরনের... বলে বোঝানো যাবে না..

চাইলেই চড়তে পারবেন সিঙ্গাপুর ফ্লায়ারে.. যা দিয়ে আপনি প্রায় পুরো সিঙ্গাপুরটা এক বসায় দেখে নিতে পারবেন....

ম্যারিনার বে'র উল্টো পাশেই রয়েছে মেরলিয়ন যা কিনা সিংহ মাথা & মাছের দেহ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সিংগাপুরের ব্যবসা বাণিজ্যের প্রতিক হিসেবে!! এই মেরলিয়নের সামনে না আসলে আপনার সিংগাপুর ভ্রমণই বৃথা!!!

সেদিন একটু তাড়াতাড়িই ফিরলাম.. একে তো জার্নির ধকল তার উপর সারাদিন ঘোরা কোন রেস্ট না নিয়েই... এনার্জি তো সেভ করা লাগবে!! কেননা পড়ে যে আরও এক্সাইটমেন্ট জমা আছে... সেই গল্প না হয় আজ থাক.... পরের পর্বে বলবো নে...
                                            +++++++++++++++++++++++++++++
#ঘুরে_এলাম_সিঙ্গাপুর_পার্ট_৩
২য় পার্ট= http://bit.ly/2j112do

ম্যারিনা বে' ঘুরে এসে পরদিন সিদ্ধান্ত নিলাম সান্টোসা যাব.. যেই ভাবা সেই কাজ.. ফেরার পার্ক স্টেশন থেকে সরাসরি চলে আসলাম হারবার পয়েন্ট... নেমেই ভিভো সিটি মল.. আপনার হাতে ২টা অপশন ভিভো সিটি থেকে সান্টসা যাওয়ার জন্য.. ১ম সান্টোসা এক্সপ্রেস আর ২য় হেটে.. ২টা তেই ফ্রী যেতে পারবেন আপনি... আমরা হেটেই গেলাম সান্টোসা নদীর সৌন্দর্য এবং ইন্দোনেশিয়াগামী বিশাল রিভার ক্রুজগুলো দেখতে দেখতে..
হেটে যেতে ৩০ মিনিট আর এক্সপ্রেসে গেলে সর্বোচ্চ ৫ মিনিট লাগবে সান্টোসা গেটে যেতে... চাইলে আপনি আরও ভিতরেও যেতে পারেন.. আরও ২টা স্টেশন রয়েছে এর পরে..
সেন্টোসা এসে আপনাদের প্রথম কাজ হবে সেন্টোসার ফান প্যাকেজ কিনে নেয়া.. ৫টা প্যাকেজ আছে যেটা আপনার সুবিধা সেটা কিনে নিতে পারেন... এতে আপনার অনেক টাকা বেঁচে যাবে কেননা সেন্টোসার সিংগেল রাইডগুলো খরচ অনেক বেশী... প্যাকেজ নেয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ.. আমরা নিয়েছিলাম DAY FUN PASS Play Max- 1.. খরচ পড়েছিল ৮১.৯০ সিংগাপুর ডলার... এর মাঝে প্রায় ২০টি রাইড ছিল... নিচে এদের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়ার চেষ্টা করছি..

4D AdventureLand: Desperados in 4D
4D AdventureLand: Extreme Log Ride
4D AdventureLand: Journey 2: The Mysterious Island
এই ৩টা রাইড আপনাকে দিবে 4D এডভেঞ্চারের এক্সপেরিয়েন্স.. আর সাথে সাউন্ড ইফেক্ট ও ইনভাইরনমেন্ট তো আছেই..

Bi-Pedal Bicycle (2 Hours)= সময় পাইনি :(

Butterfly Park & Insect Kingdom= হুদাই সময় নষ্ট.. তবে চাইলে ম্যাকাও পাখি & ইগুয়ানার সাথে ছবি তুলতে পারবেন...

Fort Siloso Combat Skirmish: Indoor Maze= যাওয়ার ইচ্ছা জাগেনি..

Megabounce or Parajump @ Mega Adventure= চমৎকার অভিজ্ঞতা.. যে কোন একটি নিতে পারবেন.. আমরা প্যারাজাম্প করেছিলাম.. প্রায় ৬-৭ তলা উপর থেকে আপনাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হবে.. :P

MOSH!= এটা বাচ্চাদের জন্য..

S.E.A. Aquarium= সান্টোসার অন্যতম সেরা আকর্ষণ.. নানা প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণীর দেখা মিলবে..

Segway Fun Ride (2 Rides)= চমৎকার রাইড..

Sentosa Merlion= জানতে পারবেন মেরলিয়নের হিস্ট্রি ও গিফট হিসেবে পাবেন মেরলিয়নের গোল্ড কয়েন :P

Skyline Luge Sentosa (1 Luge & 1 Skyride)= লুজ রাইডটা বেশী জোস ছিল..

Singapore Cable Car – Sentosa Line or K-Live Sentosa (Hologram)= মোটামুটি পুরো সান্টসা দেখতে পাবেন..

The Flying Trapeze= ফান রাইড হিসেবে জোস তবে ভারী স্বাস্থ্যের মানুষের জন্য নয় :P

Tiger Sky Tower= সময় পাইনি :(

Trick Eye Museum Singapore= চমৎকার 3D পিকচারের সাথে তুলতে পারবেন জীবন্ত ছবি.. খুব ভালো লেগেছিল.

Wave House Sentosa – Catch-A-Wave (1 Try)= সময় পাইনি :(

Wings of Time (Standard Seat)= সান্টোসার সেরা আকর্ষণ.. এটা মিস মানে তো সব মিস..

Images of Singapore LIVE*= ভালো লাগেনি
Madame Tussauds Singapore*= হাইলি রিকমেন্ডেড...

একটা ব্যাপার আপনাকে মাথায় রাখা লাগবে আর তা হলো একেক রাইডের একেক এন্ডিং টাইম... অর্থাৎ এই সময় পার হয়ে গেলে রাইড গুলো অফ হয়ে যাবে.. তখন আমাদের মত মিস হবে রাইডগুলো.. একটু সময় নিয়ে সকাল সকাল যাওয়াই ভালো..
ফেরার পথে চাইলে ঘুরে নিতে পারেন ভিভো সিটি মল.. মোটামুটি পৃথিবীর কমবেশি বিখ্যাত অধিকাংশ ব্র্যান্ডের দোকান পাবেন এই মলে.. দাম একটু বেশীই.. :P

আজ আপাতত এইখানেই শেষ হোক.. পরের এক্সপেরিয়েন্সগুলো জানার জন্য অপেক্ষায় থাকুন..
ধন্যবাদ..
হ্যাপি ট্রাভেলিং..
                             ++++++++++++++++++++++++++++

#ঘুরে_এলাম_সিঙ্গাপুর_পার্ট_৪ (শেষ পর্ব)
৩য় পার্ট= http://bit.ly/2jgif2H

..
ভেবেছিলাম সেন্টোসা ও ইউনিভার্সাল স্টুডিও একই দিনে দেখে শেষ করবো.. কিন্তু তা কোন ভাবেই সম্ভব হয়নি.. কেননা সেন্টোসার প্যাকেজ শেষ হতেই রাত.. তাই বাধ্য হয়ে আবার পরদিন যাওয়া লাগলো ইউনিভার্সাল স্টুডিও.. ইউনিভার্সাল স্টুডিও এর জন্য আপনার খরচ হবে প্রায় ৭৫ সিংগাপুর ডলার.. এই টিকিটেই আপনি রাইডগুলোতে আনলিমিটেড চড়তে পারবেন..
সব থেকে বুদ্ধিমানের কাজ হবে যদি সকাল সকাল সেখানে যেতে পারেন তাহলে মোটামুটি সব রাইডেই ১ বার করে চড়া সম্ভব হবে.. আমরা একটু দেরী করে যাওয়ায় আর সম্ভব হয়নি সব রাইডে চড়ার..
যারা গিয়েছেন তারা খুব ভালো করেই জানেন রাইডগুলো কতোটা থ্রিলিং!!!! টাইফুন ও রকেট রোলার কোস্টার ছিল এর মাঝে সব থেকে ডেঞ্জারাস.. এই ২ রোলার কোস্টারে চড়লে মনে হবে সে আপনার সাথে মশকরা করতেছে তার ইচ্ছামত... কখনো পুরা ফুল স্পীডে উল্টে গিয়ে আপনাকে আকাশ দেখাচ্ছে, কখনো আবার ডানে বামে কাত হয়ে এই বুঝি ফেলে দিচ্ছে..!! তবে আমার কাছে বেষ্ট ছিল ট্রান্সফর্মার রাইড.. থ্রিডি ইফেক্ট এর সাথে আপনাকে সেই অপ্টিমাস প্রাইম ও বাম্বল বী'র দুনিয়ায় নিয়ে যাবে...
আর রাতে তো রয়েছেই ইউনিভার্সাল স্পেশিয়াল ফায়ারওয়ার্কস.. এই ইউনিভার্সাল স্টুডিও দিবে আপনাকে সিংগাপুর ভ্রমণের আসল মজা... আমার জন্য এই অভিজ্ঞতা ছিল বেষ্ট..
..
আপনি চাইলে আরও কিছু জায়গায় ঘুরতে পারেন.. যেমন- সিংগাপুর জু, নাইট সাফারি, রিভার সাফারি, জুরং বার্ড পার্ক সহ আরও অনেক কিছু... সময়ের অভাবে যেতে পারিনি বলে বিস্তারিত কিছু লিখলাম না... তবে আপনি চাইলে খরচ চেক করে নিতে পারেন এই লিঙ্কে= http://bit.ly/2iqMshK ..
সম্ভব হলে ঘুরে আসতে পারেন পাসির রিস পার্ক থেকে.. চাঙ্গি এয়ারপোর্ট পার হয়ে আরও ৩ ষ্টেশন পর এই পাসির রিস.. আমাদের হোটেল থেকে মেট্রোতে প্রায় ১ ঘণ্টার জার্নি.. চমৎকার সুন্দর একটা পার্ক আর সাথেই রয়েছে বীচ.. চাইলেই সাইকেল ভাড়া নিয়ে ঘুরতে পারবেন সারা পার্ক তভে ঘণ্টা প্রতি খরচ পড়বে ১০ সিংগাপুর ডলার.. আর হ্যা এর জন্য অবশ্যই আপনাকে পাসপোর্ট সাথে থাকা লাগবে..
..
অনেকেই জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমার খরচ কত পড়েছিল?? বিস্তারিত দেয়ার চেষ্টা করছি আশা করবো এতে সবার কনফিউশন দূর হয়ে যাবে..

এয়ার ফেয়ার= ২৭০০০/- (এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস)
ভিসা ফী= ৫০০০-৭০০০/- (এটা নিয়ে অনেক বাজে অভিজ্ঞতা আছে তাই ফী রেঞ্জে বললাম)
হোটেল ভাড়া= ৮১৩০/- (ট্রিপল শেয়ার+ ৪রাত হোটেল ক্ল্যারমোন্ট)
লাঞ্চ ও ডিনার= ৬-৮ সিংগাপুর ডলার (২ বেলা)
সেন্টোসা= ৮১.৯০ সি.ডলার
ইউনিভার্সাল স্টুডিও= ৭৫ সি.ডলার
যাতায়াত= ২৫-৩০ সি.ডলার (শুধু মাত্র মেট্রো রেলের ভাড়া.. ট্যাক্সি হলে আরও বেশী পড়বে)
..
টোটাল খরচ পড়বে ৫৫-৬০০০০/- টাকার মত পার পারসন শপিং বাদে..
ভাগ্য ভালো কোন মেয়ে ছিল না আমাদের সাথে, বাকিটা বুঝে নেন.. :P ;)
..
যাই হোক যদি সিংগাপুর ট্যুর নিয়ে কারোর কিছু জানার থাকে তবে কমেন্টে জিজ্ঞাসা করবেন.. চেষ্টা করবো সাহায্য করার..
..
নিজে ঘুরুন এবং অন্যকে ঘুরতে উৎসাহিত করুন.. :)
হ্যাপি ট্রাভেলিং.. <3

++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
AR Rahman Asif‎ to উদ্যোক্তা হও (বিজনেস আইডিয়া,অভিজ্ঞতা)
Chittagong ·
সামুদ্রিক মাছ দরকার দৈনিক ৫০-৬০ টন।
যোগাযোগ-০১৯১৪৯০৮৩৪৮
01914908348



++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++




মেঘের রাজ্যে দশ দিন ( মিশন অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ) ১ম পর্ব


অন্য লেখা গুলো মেঘের রাজ্যে দশ দিন ( মিশন অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ) ১ম পর্ব  মেঘের রাজ্যে দশ দিন ( মিশন অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ) ২য় পর্ব  মেঘের রাজ্যে দশ দিন ( মিশন অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ) ৩য় পর্ব  মেঘের রাজ্যে দশ দিন ( মিশন অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ) ৪র্থ পর্ব  মেঘের রাজ্যে দশ দিন ( মিশন অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ) ৫ম পর্ব মেঘের রাজ্যে দশ দিন ( মিশন অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ) ৬ষ্ঠ পর্ব মেঘের রাজ্যে দশ দিন ( মিশন অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ) ৭ম পর্ব মেঘের রাজ্যে দশ দিন ( মিশন অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ) ৮ম পর্ব মেঘের রাজ্যে দশ দিন ( মিশন অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ) ৯ম পর্ব

শুরুর কথা

ছোট বেলায় স্কুলে পড়ার সময় হিমালয় পর্বতমালার নাম শুনে নাই, এমন বোধহয় একজনকেও খুঁজে পাওয়া যাবেনা। একটা সময় হিমালয় আর এভারেস্টকে একই জিনিস ভাবতাম,'পর্বতমালা' র শব্দের অর্থই বুঝতাম না। আমার কল্পনার গণ্ডীও ছিল অল্প, আমি ভাবতাম এভারেস্ট বুঝি বিশাল বড় এক পাহাড়, আর তার আশে পাশে সব আমাদের মতো সমতল ভূমি। ভুল ভাঙল আরও বড় হয়ে, যখন জানলাম হিমালয় হাজার হাজার মেইল জুড়ে বিস্তৃত অনেক গুলো বিশাল বিশাল পর্বতের এক সমাহার। তখন থেকেই পাহাড়ের প্রতি আমার এক টান তৈরি হয়। ইন্টারনেটে যখন লাদাখের পাহাড় গুলো দেখতাম তখন মন হুহু করে উঠত। 'থ্রি ইডিয়টস' মুভির শুরুতে নাম দেখানোর সময় যখন শিমলার ল্যান্ডস্কেপ দেখতাম, ভাবতাম, যেভাবেই হোক, একদিন এখানে যেতেই হবে। কিন্তু কখনো সাহস করে উঠা হয়নি।পাসপোর্ট করানোর ঝক্কি ঝামেলার ভয়ে আমার সব কল্পনা, কল্পনাই থাকল। এর মাঝে একদিন অফিসের নাজমুল ভাই এসে বললেন, 'আলম,নেপাল যাবা নাকি?' আমি তো শুনে তড়াক করে উঠলাম, যাব মানে? আলবৎ যাব। উনি বললেন, পরশু দিন পাসপোর্ট করাইতে যাব, কাগজপত্র সব রেডি কর। এতদিন একা এই ঝামেলায় যাওয়া হয়নি, ভাবলাম, এখন না করা হলে আগামী ১ বৎসরেও হবে না। সাথে আবার 'সাদ্দাম'ও যোগ হল। ১ মাস পর পাসপোর্ট হাতে পেলাম আর সব সময়ের মতো, যাদের নেপাল ট্যুরের আগ্রহে পাসপোর্ট টা বানাইলাম, তাদের আর কোনও খবর নাই।
আমি জিজ্ঞাস করি 'ভাই কবে যাবেন?'- আরে ভাই, হাতে কত কাজ, সময়ই তো নাই। দেখি নেক্সট বন্ধে।সেই নেক্সট বন্ধ আর আসে না, আর আমার পাসপোর্টের উপর ধুলা জমে।
শেষমেশ নিজেই বসলাম ট্যুর প্ল্যান করতে। ঠিক করলাম 'অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প' যাব। এইখানে বলে রাখা ভাল, আমার ওজন ১২০কেজি মাত্র ।তাই অনেকেই এই প্ল্যান শুনে বলল, মইরা যাবি, উঠতে পারবি না, আগে ব্যায়াম কর, ট্রেনিং কর, বান্দরবন ঘুইরা আয় ইত্যাদি নানান কথা। আমি বুঝলাম এখন যদি প্ল্যান করি ওজন কমে ৯০ তে আসলে তারপর অথবা বান্দরবন আগে ঘুইরা তারপর যাব তাহলে আবার আমার পাসপোর্টে ধুলা জমবে। ইটস নাও অর নেভার।
জ্যোতি রাজি হল আমার সাথে যাওয়ার জন্য। সময় লাগবে ১০ দিন, যাওয়া আসা আর ট্রেক সব মিলিয়ে। প্রাইভেট চাকরি করি, হটাত করে যেয়ে যদি বসকে বলি যে ১০ দিন ছুটি দেন,তার অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়ায় দেয়া যায় না। তাই ঠিক করলাম কুরবানি ঈদের বন্ধে চলে যাব। জীবনে কখনো বাবা মা ছাড়া ঈদ করি নাই আগে, তাই সিদ্ধান্তটা অনেক কঠিন ছিল আমার জন্য।  ইতোমধ্যে নোমান আমাদের প্ল্যান শুনে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করল।
ঈদের তখনো মাস খানেক বাকি, আমি প্ল্যান শুরু করলাম। কই যাব, কোথায় থাকব,গাইড নিব কিনা ইত্যাদি এইসব বিষয়ে যত ব্লগ আর ভিডিও আছেসব দেখতে থাকলাম। এরপর আসলো সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদ, জ্যোতি একটা ব্যক্তিগত ঝামেলার কারণে যেতে পারবেনা বলে জানালো। তার যাওয়ার ইচ্ছার কোনও কমতি ছিল না , কিন্তু উপায় নাই। এইদিকে এখন আমার অন্ধের যষ্টি নোমানের নাই পাসপোর্ট, তারে ধইরা বাইন্ধা পাঠাইলাম পাসপোর্ট করাইতে। বন্ধু রাফসান এর ৬ মাস আগে নেপাল এ ৩ দিনের একটা ট্রেক দিয়ে আসছিল, তার কাছ থেকে গাইডের কন্টাক্ট নিলাম। হাতে আছে ১ মাস, আমি অফিসের কাজ ছাড়া সারাদিন বিভিন্ন ব্লগ পড়ি অন্নপূর্ণা ট্রেক নিয়ে, আর গাইডের সাথে পরামর্শ করি। এইদিকে প্লেন ভাড়া তর তর করে বেড়ে যাচ্ছে দেখে নোমান কে বললাম আগে টিকেট না কাটলে পরে দ্বিগুণ টাকা দিয়ে কাটা লাগেতে পারে। সে টেনশনে ছিল তার পাসপোর্ট নিয়ে, কারণ মাত্রই কয়েকদিন আগে সে এপ্লাই করে আসল, দেরি হলে তো পুরা ধরা। তাকে শান্ত করলাম এই বলে যে , ইন দেট কেস টিকেটক্যানসেল করা যাবে আর নাম মাত্র কিছু ফি কেটে রাখবে। আমি যে বিষয়টা নিয়ে টেনশনে ছিলাম না, তানা। নোমান কোনও কারণে যেতে না পারলে শেষে আমাকে একা যাওয়া লাগবে। ততদিনে ১৫,০০০টাকার ইউ এস বাংলার টিকেট ১৯৫০০ টাকায় এসে ঠেকেছে। তাই সই । ৮সেপ্টেম্বর এ ২ টা টিকেট বুকিং দিয়ে দিলাম , ১৮ সেপ্টেম্বর রিটার্ন সহ ।
আল্লাহর রহমতে পাসপোর্ট টাইম মতই বের হল। নোমানের চেয়ে বেশি খুশি মনে হয় আমি হলাম, যাক ,আমার সাধের হিমালয় দেখার পথে অর্ধেক আগায় গেলাম। কিন্তু এতো সহজে সবকিছু হবার নয়। নোমানের বোনের বিয়ে কথা বার্তা চলছিল।সে একদিন ফোন করে বলল, “দোস্ত, ঘটনা তো ডিস্টার্ব, বড় বোনের বিয়া ঠিক হচ্ছে, যদি ৮তারিখের পরে হয়, তাহলে ট্যুর ক্যানসেল”। আবার আমার টেনশন শুরু। এক সময়ের কলিগ আর ভার্সিটির বড় ভাই ৫ জন ও আবার সেই সময় অন্নপূর্ণা যাবার প্ল্যান করছিল, তাদের ফোন দিলাম যে তাদের সাথে যাওয়া সম্ভব কিনা। গাইড কে বললাম ভাই, খরচ টরচ একটু কমায় রাখাযায় কিনা, ২ জনের জায়গায় ১ জন আসতেছি। মানে আমি ধরেই নিসিলাম যে একা যাওয়া লাগবে। ভাগ্য হয়তো আমার প্রতি সুপ্রসন্ন ছিল, নোমানের বোনের বিয়ে ঠিক হল ৭ তারিখ রাতে। মানে যেদিন আমরা যাব তার ঠিক আগের দিন। আমি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।  যাওয়ার আগে টুকিটাকি শপিং করলাম।১০০ লিটারের দানবীয় ম্যাক্স ব্যাগ কিনলাম। আর কিনলাম বহুদিনের শখের ১ জোড়া উডল্যান্ড বুট, যাদের নিজেদের ওজনই মনে হয় ৩ কেজি  । আর ট্যুরের জন্য আগেই কিনেছিলাম গরিবের একশন ক্যামেরা ‘গিক প্রো’।
ফ্লাইট ছিল ৮ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩ টায়। আমি অফিসের একটা মিটিং সেরে ১ টার মধ্যে এয়ারপোর্ট পৌছে গেলাম।  যেয়ে নোমান কে ফোন দেই,কিন্তু বসের ফোন বন্ধ। প্রায় ১৫ ২০ মিনিট টানা ফোন দিয়ে গেলাম, বন্ধ ত বন্ধই। ওর আশে পাশের কাওকে যে ফোন দিব সেই নাম্বারও নাই। এদিকে তার প্লেন এর টিকেট আমার কাছে। কোন প্লেন এ কই যাব এইসব নিয়া তার কোনও আইডিয়াও নাই, কারণ সম্পূর্ণ প্ল্যান আমার করা। তাই ওকে রেখে ভিতরে ঢুকতেও পারতেছিনা। ১.৩০এর দিকে তার ফোন অন পাইলাম, বলল যে আর ৫ মিনিট লাগবে। মনে একটু শান্তি আসল, আমি ত ভাবা শুরু করে দিয়েছিলাম যে তীরে এসে বুঝি এখন তরী ডুবে।

১মদিনঃ (কাঠমান্ডু)
গাট্টিবোসকা সব লাগেজে দিয়ে প্লেনে এ উঠে বসলাম। লাইফের প্রথমবার ইন্টারন্যাশনাল বর্ডার ক্রস করব, চিন্তা করেই একটু উত্তেজিত লাগছিল। প্লেন জার্নিটাও বলার মতো ছিল। ৩০ মিনিট ফ্লাই করার পরই ছোট খাটো ঝড়ের মধ্যে পড়লাম আমরা। পাইলট আমাদের বলে দিল, এতে চিন্তার কিছু নাই, আমরা যাতে চিল করে বসে থাকি। কিন্তু চিল আর করতে পারলাম কই, দেখালাম মেঘের মধ্যে দিয়ে প্লেন যাচ্ছে আর থর থর করে কাঁপছে । একটা বিদ্যুৎ যেন ঠিক আমার জানালার পাশেই চমকে উঠল। আমি আল্লাহ আল্লাহ করতে লাগলাম। নেপালের লোকাল টাইম অনুযায়ী আমরা বিকাল ৬.৪০ এ ‘ত্রিভুবন এয়ারপোর্ট’ এ ল্যান্ড করি। তখন বৃষ্টির কারণে এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করা মাত্রই আমারা অসাধারণ সুন্দর একটা রংধনু পেলাম।
ত্রিভুবন এয়ারপোর্ট, নেপালে পা দিয়েই প্রথম এই দৃশ্য দেখি

এয়ারপোর্ট টাও অনেক ছিমছাম,সুন্দর। ঢোকা মাত্রই দেখবেন সবাই হুড়মুড় করে কি একটা ফর্ম নিয়ে ফিলাপ করছে,অন এরাইভাল ভিসার জন্য। অ বলা হয়নি, নেপাল এ কিন্তু অন এরাইভাল ভিসা দেয়া হয় আমাদের জন্য। মানে শুধু আপনার পাসপোর্ট থাকলেই চলবে, যদিও এখন এটা অনেকেই জানে। যা বলছিলাম, আপনার ফরম ফিল আপ করার কোনও দরকার নাই। ভিতরে ঢুকে একটু সামনে আগালে দেখবেন এটিএম বুথের মতো কয়েকটা মেশিন। ঐটার উপর একটা স্ক্যানার প্যানেল দেখবেন, আপনার মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের মেশিন রিডেবল পেজটা তার উপর ধরুন। বুঝতে না পারলে এয়ারপোর্টের কর্মকর্তার সাহায্য চান। এরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার বেসিক তথ্য গুলো এন্ট্রি হয়ে যাবে। সাথে কিছু অতিরিক্ত তথ্য টাইপ করে দিতে হবে, যেমন কোথায় যাবেন নেপালে, কোথায় থাকবেন, কতদিন থাকবেন এইসব। সবশেষে মেশিনের সাথে যুক্ত ওয়েবক্যাম দিয়ে আপনার একটা সুন্দর ছবি তুলে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। (মেশিন ছাড়া ম্যানুয়ালি ফর্ম ফিলাপ করলে সাথে ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি দিতে হবে )। এরপর একটি স্লিপ বের হয়ে আসবে, সেটি সহ ইমিগ্রেশনের লাইনে দাঁড়িয়ে যান। সাধারণত ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা লাগতে পারে ইমিগ্রেশনের ঝামেলা শেষ করে বের হতে।

এয়ারপোর্টে থেকে বের হওয়া মাত্র শুরু হয়ে যাবে ট্যাক্সি ড্রাইভারদের হাঁক ডাক। আমরা কাঠমান্ডু তে রাতে ছিলাম থামেল এ, সাধারণত টুরিস্ট রা আসলে এই জায়গাতেই উঠে। প্রচুর পরিমাণ হোটেল আছে এখানে, সময় আর এনার্জি থাকলে থামেলে হেঁটে হেঁটে হোটেলের ভাড়া যাচাই করে উঠতে পারেন। আমি বিভিন্ন যায়গায় পড়ে এসেছিলাম যে এয়ারপোর্ট থেকে থামেল ৩০০ থেকে ৩৫০ নেপালি রুপি ভাড়া (শুধু রুপি বলবেন না, রুপি বললে ইন্ডিয়ান রুপিও বুঝতে পারে। কেও রুপি বললে আগে শিওর হয়ে নিন যে সে নেপালি রুপি মিন করেছে কিনা। নেপালে ইন্ডিয়ান রুপিও চলে)। এক ট্যাক্সি ড্রাইভার আমাকে বুঝায় দিল যে ৩০০ রুপি মোঘল রাজা বাদশাহর আমলের ভাড়া, এখন ৭০০ রুপির নিচে দুনিয়ার কোনও ট্যাক্সিই যাবে না, আর যদি যায় তাহলে আমাকে ফ্রি নিয়ে যাবে। আর আমরা বাংলাদেশ থেকে আসছি, বাংলাদেশ নেপাল ভাই ভাই,ভাই কি ভাই এর কাছে বেশি চাবে? ।আমি ভাবলাম কথা সত্য । তার কনফিডেন্স দেখে একটু ভড়কে গেলাম, নোমান কে বললাম, ভাড়া মনে চ্যাঞ্জ হইসে, চল এই ভাড়া তেই যাই। এন্ড এইটা ছিল আমার প্রথম ভুল। কি ভুল সেইটা পরে বুঝতে পারবেন। ড্রাইভার কে বললাম সামনে কোনও মানি এক্সচেঞ্জার পাইলে যাতে দাড়া করায়। এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশনের পাশে একটা মানি এক্সচেঞ্জার পাবেন, চেষ্টা করবেন ঐখানে ডলার না ভাঙ্গাইতে, ১ ২ টাকা কম পাবেন। ভালো হয় থামেলে যেয়ে ভাঙ্গাতে পারলে, ঐখানে প্রচুর মানি এক্সচেঞ্জার আছে, দামাদামি করতে পারেন (এইখানে টাকা ভাঙ্গাইতেও দামাদামি করতে হয়) ।

তো আমি আর নোমান ট্যাক্সি তে উঠে বসলাম। ড্রাইভারের পাশে বসল ‘লালু পান্ডে’। এই ট্যাক্সি তে তার রোল টা কি আমি বুঝলাম না, ভাড়া নিয়ে তার সাথেই কথা হয়েছিল। আমি তাই ভেবেছিলাম সে ড্রাইভার, এখন দেখি ড্রাইভার আরেকজন। ড্রাইভারের নাম ‘মনোজ’। আমার দেখা এখন পর্যন্ত সেরা ইভটিজার। এয়ারপোর্ট থেকে থামেল পর্যন্ত এমন একটা মেয়ে নাই যাকে নিয়ে সে কোনও কমেন্ট করে নাই। কোনও মেয়েকে দেখে হয়তো বলছে –‘ভগবান নে ক্যায়া বানায়া ইয়ার’, পরোক্ষণেই স্কুটারে বসা কোনও মেয়েকে বলছে – ‘আরে,হামকো ভি লে জা’।   এর মাঝে লালু পান্ডে আমাকে জিজ্ঞাস করল কোন হোটেলে যাব। আগে প্ল্যান করে রেখেছিলাম হোটেল বাজেটে যাব।এখন টুরিস্ট সিজন পুরোপুরি শুরু হয় নাই, তাই আগে থেকে হোটেল বুক করে যাই নাই।হোটেল বুক করে গেলে, নরমালি হোটেলে বললে ট্যাক্সি ওরাই পাঠিয়ে দেয়। নরমাল ট্যাক্সি ড্রাইভার দের আবার বিভিন্ন হোটেলের সাথে লিঙ্ক থাকে, ওরা যদি বুঝতে পারে যে আপনার আগে থেকে বুকিং করা নাই,তবে শিঊর থাকেন যে আপনি যেই হোটেলের নাম বলেছেন সেখানে নিয়ে যাবেনা, অন্য কোথাও দাড়া করাবে। বলবে যে আগে দেখেন, ভালো না লাগলে আপনি যেখানে বলবেন সেখানে নিয়ে যাব। তো লালু পান্ডে আমাকে বোঝানো শুরু করল যে হোটেল বাজেট তো ভূমিকম্পে ক্যাক হইয়া গ্যাসে, ঐখানে এখন কিছু নাই,আপনারে এই হোটেলের কথা কে বলছে, যে বলছে সে নিশ্চয়ই ২ বৎসর আগে থাইকা গ্যাসে ব্লা ব্লা ব্লা। আমি এদের এই স্বভাব আগেই জানতাম, তাই বললাম, ভেঙ্গে গেলে গ্যাসে, আপনি ঐখানেই নিয়া যান।  যথারীতি তারা আমাকে সেখানে না নিয়ে ,নিয়ে গেল হোটেল পিলগ্রিম। নামায় দিয়ে বলে হোটেল দেখেন, ভালো না লাগলে ......... । মেজাজ টা খারাপ হয়ে গেল, কিছু বললাম না, শরীর সারাদিনের মিটিং আর জার্নি মিলায় অনেক টায়ার্ড হয়ে ছিল। আমরা ঐ রাতে পিলগ্রিমেই ছিলাম, ডাবল বেড ১ রাত১০০০ রুপি হিসাবে। এর মাঝে ট্যাক্সি থেকে নেমে ১০০ ডলার ভাঙ্গায় নিয়ে আসলাম, সব একবারে না ভাঙ্গানোই ভাল, সে ক্ষেত্রে দাম যাচাই করার সুযোগ পাওয়া যায়। আমার কাছে যেমন চেয়েছিল, ১০৫ রুপি পার ডলার, আমি ১০৬করে নিয়েছিলাম। যেখানে পরে থামেল থেকেই পেয়েছিলাম ১০৭ করে। বড় ডলারের নোট ভাঙ্গালে রেট ভালো পাবেন। তাই চেষ্টা করবেন ১০০ ডলারের নোট রাখতে ।
পিলগ্রিম হোটেল রিসিপশন

হোটেলে ব্যাগ ট্যাগ রেখে, গোসল করে আমরা বের হলাম থামেল ঘুরে দেখতে। সবচেয়ে যেই জিনিসটা কাঠমান্ডু তে ভালো লেগেছে তা হল ওদের ট্রাফিক রুল মেনে চলা। লেফট লেন দেখলাম সবসময় ফাঁকা রাখে, মোটরসাইকেল তো মানেই, বাইসাইকেল পর্যন্ত ট্রাফিক সিগনাল মেনে চলে। আর প্রচুর পরিমাণ স্কুটার আর মোটর সাইকেল। অনেকে মেয়ে দেখলাম স্কুটার চালাচ্ছে। থামেলের রাস্তাটাও দেখলাম ছিম ছাম। প্রচুর পরিমাণ ট্রেকিং এর ইকুইপম্যান্ট এর দোকান। সবগুলোতে খাঁটি নকল ‘নর্থ ফেস’ এর গিয়ার পাবেন। এইখানে দামা দামিও করতে হয় ঢাকার নিউমার্কেটের মতো। একটাই পার্থক্য, ঢাকায় যেমন কোনও একটা দাম বলে দোকান থেকে বের হয়ে যাবার সময় পিছন থেকে আবার ডাক দেয়, এইখানে তেমন দেয় না (পরীক্ষিত :P )। আমরা ১ টা করে ট্রেকিং স্টিক কিনলাম। ৪৫০রুপি দাম নিয়েছিল। এই স্টিক টা আগামী ৭ দিন যে পরিমাণ হেল্প করবে তা আগে থেকে ধারণা করতে পারি নাই। একটা সিম কিনে নিলাম নেপাল টেলিকম ওরফে নমস্তে টেলিকম এর ২০০রুপি দিয়ে। গিক প্রো র মেমরি কার্ড টা ভুলে না নিয়ে আসাতে আরেকটা মেমরি কার্ড ও কিনতে হল।  আরেকটা মানি এক্সচেঞ্জার থেকে ১০৬.৫ রুপি রেটে২০০ ডলার ভাঙ্গায় নিলাম।
রাতের থামেল

এরপর থেকে শুরু হল রেস্টুরেন্ট খোঁজা। পুরো কাঠমান্ডুতে ২ টা হালাল রেস্টুরেন্ট আছে, একটার নাম মক্কা, আরেকটার নাম মদিনা। মদিনা রেস্টুরেন্টটা গরু খোঁজা শুরু করলাম। কোনও এক কারণে নেপালের ম্যাপ গুগল ম্যাপ এ অফলাইন হিসেবে সেভ করে রাখা যায় না। সেই জন্য খুঁজে পেতে আরও ঝামেলা হচ্ছিল। লোকাল লোক জনকে জিজ্ঞাস করলে তারাও আকাশ বাতাস দেখে। শেষে আর খুঁজে না পেয়ে হাটতে লাগলাম নরমাল রেস্টুরেন্টের জন্য। হটাত দেখলাম এক রেস্টুরেন্ট এ বাংলায় লেখা ‘বাংলা খাবার’। বিদেশ বিভূঁইয়ে এসে এতো সব হিন্দি লেখার মাঝে(নেপাল আর হিন্দি ভাষার বর্ণমালা কিন্তু একই) বাংলা লেখা দেখে মনটা গলে গেল। নোমান কে বললাম, মদিনা বাদ দে, এইটাতেই যাই। যেয়ে দেখি আমরা দোকানের একমাত্র কাস্টমার। দেখে একটু দমে গেলাম। ভাবলাম ভুল যায়গায় চলে আসলাম নাকি। নোমান একটা রুই মাছ আর আমি একটা মুরগি অর্ডার করলাম। ১৫ ২০ মিনিট পর একজন এসে খাবার দিয়ে গেল। তাকে বললাম পানি দেন, সে আর বুঝে না। কত অঙ্গী ভঙ্গি করে, মুখের কাছে গ্লাস ধরার ভাব করে বোঝানোর চেষ্টা করলাম যে ভাই পানি দেন, কিন্তু সব জলে গেল। আমি ভাবতে লাগলাম এরা কি পানি খায় না, নাকি খেলে অন্য কোনও ভাবে খায়। পরে নোমান বলল ১লিটার মিনারেল, তারপর সে বুঝল। আমিও হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। খাওয়া শেষে বিল দিতে গেলাম, দেখি একজন খাটি বাংলায় বলে উঠল ‘এই মফিজ (কাল্পনিক নাম, আসল নাম ভুলে গেসি) বিল নে”। পরে জানলাম দোকানের মালিক বাংলাদেশি, নাম শামীম । নেপাল এসে নিজের হোটেল খুলেছেন । তার কাছেই জানলাম এয়ারপোর্ট থেকে ট্যাক্সি না নিয়ে একটু বের হয়ে মেইন রোড এ এভেইলেবল ট্যাক্সি পাওয়া যায় ৩০০রুপিতে।  পরের দিন সকাল ৮.৩০ তে পোখারার ফ্লাইট ধরতে হবে। সকালে কোথা থেকে ট্যাক্সি পাওয়া যাবে এইসব শুনে নিয়ে হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++



ছবি কৃতজ্ঞতা: ফ্লিকার



[লেখাটি সাপ্তাহিকের ৮ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে। ভেরিফাইড প্রেসের কন্টেন্ট পার্টনার সাপ্তাহিক বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ধারার সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন]
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
Hasan Shahriar

মধ্যবিত্তের ইউরোপ ভ্রমণ (স্পেন - ফ্রান্স - নেদারল্যান্ডস - জার্মানী - সুইটজারল্যান্ড - অস্ট্রিয়া - হাঙ্গেরি - চেক প্রজাতন্ত্র)

ইউরোপ হচ্ছে ট্রাভেলার্সদের জন্য স্বর্গ রাজ্য, যারাই ট্রাভেল করতে পছন্দ করেন সবার স্বপ্ন থাকে জীবনে একবার হলেও ইউরোপে ভ্রমণ করার। এক দেশ থেকে আরেক দেশের ভাষা, ঐতিহ্য , সংস্কৃতি আলাদা। রোমান্টিক প্লেস থেকে শুরু করে এডভেঞ্চার সব এ রয়েছে ইউরোপে।

আমাদের মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির সন্তানদের কাছে এই স্বপ্ন অধরাই রয়ে যায়। সবার প্রথম বাধা হয়ে দাঁড়ায় খরচ, খরচের বিষয়টা মেটানো গেলেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় ভিসা।

TOB তে আমার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি যেন ইউরোপ ভ্রমণ সম্পর্কে আমাদের ভুল ধারণাগুলো শুধরানো যায়, সবাই যেন সাধ আর সাধের সমন্বয় করতে পারেন।

ভিসা (VISA): (আমার বেক্তিগত মতামত)

ভ্রমণের জন্য Schengen ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। এই একটি ভিসা দিয়ে ২৬ দেশে ভ্রমণ করা যায়. (সেনজেন দেশের লিস্ট http://www.schengenvisainfo.com/schengen-visa-countries-li…/)

Schengen ভিসা আবেদনে আমরা প্রথমে যে ভুলটা করি তা হচ্ছে ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট। ভিসা আবেদনের সপ্তাহ খানেক আগে সবাই মোটা অংকের টাকা রাখে যা চরম ভুল। এম্বেসীতে যারা কাজ করেন তারা অনেক স্মার্ট, উনারা বিষয়টা নেতিবাচক ভাবে নেয়।

একাউন্ট এর ব্যালান্স শেষ ৩ মাসে যেন ধারাবাহিক হয় তা খেয়াল রাখতে হবে। শেষের ২ সপ্তাহ বড় কোন এমাউন্ট যোগ করা যাবে না। মিনিমাম ব্যালান্স বলে কিছু নেই। আপনার ট্রাভেল প্লানের সাথে ব্যালান্সের সামঞ্জস্য থাকতে হবে। কোনো ধরণের কন্ফার্ম টিকেট প্রয়োজন হয়না। আমার প্রথম Schengen ভিসার সময় ব্যাঙ্ক ব্যালান্স ছিলো ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা !!

যে কয়দিনের জন্য আবেদন করবেন তার সাথে ১৫ দিন যোগ করে ট্রাভেল ইন্সুরেন্স করতে হবে।

আপনি ইউরোপে যাওয়ার জন্য এম্বেসীতে হাজারটা কারণ বলবেন কিন্তু উনারা ভিসা দেয়ার জন্য শুধু একটা কারণ চায়, তা হচ্ছে আপনি আবার ফিরে আসবেন কিনা।

আপনি যখন ভিসা ইন্টারভিউ এর জন্য দাঁড়াবেন তখন এম্বেসী এর অফিসার ধরে নিবে আপনি ইউরোপ গেলে আর আসবেন না। পরবর্তী ৫ মিনিটে আপনাকে প্রমান করতে হবে আপনি ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে আসবেন।

কোন এম্বেসী তে আবেদন করবেন: আপনার ট্রাভেল প্ল্যান অনুযায়ী যে দেশে সবচেয়ে বেশী দিন থাকবেন সে দেশের এম্বেসী তে আবেদন করতে হবে। তবে ইতালী, ফ্রান্স এর এম্বেসী তে আবেদন না করাই। আমি এই পর্যন্ত ৩ বার ভিসা নিয়েছি ২ বার সুইডিশ আর একবার সুইস এম্বেসী থেকে। আপনি যদি ইন্টারভিউ তে ভালো হোন, মানুষ কে কনভিন্স করতে পারেন তাহলে সুইস এম্বেসী তে আবেদন করতে পারেন। আর ইন্টারভিউ কে ভয় পেলে স্প্যানিশ, সুইডিশ এম্বেসী তে (ইন্টারভিউ হয়না)

খরচ:

ইতালিতে রিটার্ন টিকেট তুলনামূলক কম, অনেক এয়ারলাইন্স প্রমো টিকেট ছাড়ে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকায়। এয়ারলাইন্স গুলোর অফারের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

ইউরোপে হোস্টেল গুলো অনেক ভালো, নিরাপদ। যাদের সারাদিন ঘুরার পর রাতে শুধু ঘুমানো দরকার তাদের জন্য হোস্টেল। হোস্টেল ইউরোপের ট্যুরিজম এর এক ঐতিহ্য। মেয়েদের জন্য আলাদা ডর্ম রুম রয়েছে।

হোস্টেল এ ডর্ম রুম গুলোতে ১০ থেকে ৩০ ইউরো খরচ পরে। ৫০ ইউরোতে সিঙ্গেল রুম পাওয়া যায় (দেশ ভেদে দাম ভিন্ন হতে পারে)

যাতায়াত ব্যবস্থা অসাধারণ, অল্প টাকায় এক সপ্তাহের মেট্রো টিকেট কিনে নিতে পারেন। এক দেশ থেকে আরেক দেশে ট্রেনে যাতায়াত করা যায় (অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়) যাওয়ার আগে টিকেট কেটে নিলে অনেক কমে পাওয়া যায়। Ryan এয়ার নাম এয়ারলাইন্স আছে যাতে অসম্ভব কম দামে ট্রাভেল করা যায় এক দেশ থেকে আরেক দেশে ১৯ ইউরো !!!

খাবার: ফাস্টফুড চেইন গুলোতে খাবার সস্তা। মাছ ভাত খাওয়ার কোন সুযোগ নেই। লোকাল, স্ট্রিট ফুড ট্রাই করতে পারেন। ভাত ছাড়া একটু কষ্ট ই হয়ে যায়।

... চলবে।


ছবি : জার্মাট, Switzerland

******আগের ভ্রমণ কাহিনী *****

============================================================================
১। হিটলার, একজন অমুসলিম।
৬০ লক্ষ ইহুদি হত্যা করেছিলো। মিডিয়া একবারও তাকে বলেনি সে খৃষ্টান সন্ত্রাসী!
২। জোসেফ স্ট্যালিন, একজন অমুসলিম।
সে ২০ মিলিয়ন মানুষ হত্যা করেছে, এবং ১৪.৫ মিলিয়ন মানুষ অসুস্থ হয়ে ধুঁকে ধুঁকে মারা গেছে।মিডিয়া একবারও তাকে বলেনি সে খৃষ্টান সন্ত্রাসী!
৩। মাও সে তুং একজন অমুসলিম।
১৪ থেকে ২০ মিলিয়ন মানুষ হত্যা করেছে!
মিডিয়া একবারও তাকে বলেনি সে বৌদ্ধ সন্ত্রাসী!
৪ । মুসলিনী (ইটালী) ৪ লাখ মানুষ হত্যা করেছে!
সে কি মুসলিম ছিল ?
অন্ধ মিডিয়া একবারো বলে নাই খৃষ্টান সন্ত্রাসী!
৫ । অশোকা (কালিঙ্গা বেটল)
১লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে! মিডিয়া
একবারও তাকে বলেনি সে হিন্দু সন্ত্রাসী!
৬ । আর জজ বুশ ইরাকে, আফগানিস্থানে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন মানুষ হত্যা করেছে! মিডিয়া তো বলে নাই, খৃষ্টান সন্ত্রাসী!
৭ । এখনো মায়ানমারে প্রতিদিন মুসলিম
রোহিঙ্গাদের খুন, ধর্ষন, লুটপাট, উচ্ছেদ করছে! তবুও কোনো মিডিয়া বলে না
বৌদ্ধরা সন্ত্রাসী ! ইতিহাস সাক্ষী পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে বড় বড় গনহত্যা করেছে অমুসলিমরা।
আর এরাই দিন রাত গণতন্ত্র জপে মুখে ফেনা
তুলে ! অথচ এদের দ্বারাই মানবতা লুন্ঠিত !
এবার আসুন একটু হিসাব মিলাই------
ক। যারা প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু করেছিল, তারা কি মুসলিম ছিল ?
খ। যারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করেছিল,
তারা কি মুসলিম ছিল ?
গ। যারা অস্ট্রেলিয়া আবিষ্কারের পর নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য ২০
মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান আদিবাসীকে হত্যা
করেছিল, তারা কি মুসলিম ছিল?
ঘ। যারা হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে
পরমাণু বোমা নিক্ষেপ করেছিল, তারা কি
মুসলিম ছিল ?
ঙ। যারা আমেরিকা আবিষ্কারের পর নিজেদের প্রভাব বিস্তারের জন্য, উত্তর
আমেরিকাতে ১০০ মিলিয়ন এবং দক্ষিন আমেরিকাতে ৫০ মিলিয়ন রেড-
ইন্ডিয়ানকে হত্যা করেছিল, তারা কি মুসলিম ছিল?
চ। যারা ১৮০ মিলিয়ন আফ্রিকান কালো মানুষকে কৃতদাস বানিয়ে আমেরিকা নিয়ে গিয়েছিল । যাদের ৮৮ ভাগ সমুদ্রেই মারা গিয়েছিল এবং তাদের মৃত দেহকে আটলান্টিক মহাসাগরে নিক্ষেপ করা
হয়েছিল, তারা কি মুসলিম ছিল?
উত্তর হবে, এসব মহাসন্ত্রাসী ও অমানবিক কার্যকলাপের সাথে মুসলমানরা কখনো জড়িত ছিল না।
আপনাকে সন্ত্রাসের সংজ্ঞা সঠিকভাবে করতে হবে।
যখন কোন অমুসলিম কোন খারাপ কাজ করে, তখন এটাকে বলা হয় অপরাধ!
আর যখন কোন মুসলিম একই খারাপ কাজ
করে, তখন এটাকে বলা হয় ইসলামী জঙ্গীবাদ।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
ভিজিটর ভিসা নিয়ে ঘুরতে আসুন অস্ট্রেলিয়ায়
০৩ ফেব্রুয়ারি শুক্র, ২০১৭

বিদেশের বুকে হাজারো সুবিধা পাওয়া স্বত্ত্বেও সব বাঙালির মনের মাঝে যেই অপূর্ণতাটা কাজ করে, তা হলো আপন পরিজনদের কাছে না পাওয়ার শূণ্যতা। আর তাই সবার মনেই একটা সুপ্ত ইচ্ছা থাকে, সুযোগ পেলে নিজের বাবা- মা অথবা আপনজনকে অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে নিয়ে আসার। বাবা- মাকে অস্ট্রেলিয়ায় আনতে কিভাবে ভিসার আবেদন করবেন?

ভিজিটর ভিসা (সাব ক্লাস ৬০০) তাদের জন্য যারা সল্প মেয়াদে অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে আসতে চায় অর্থাৎ ব্যবসার কাজে অথবা ট্যুরিস্ট হিসেবে অথবা পরিবারের কাছে কয়েক দিনের জন্য আসতে চায়। মনে রাখতে হবে এটা অস্থায়ী ভিসা, এই ভিসা থেকে স্থায়ী ভিসায় আবেদনের কোন সুযোগ নেই। ভিসা হবার পর মেয়াদ বাড়ানোর বা অস্ট্রেলিয়ায় থাকা অবস্থায় পুনরায় আবেদন করা সম্ভব নয়। এই ভিসায় আবেদন করার সময় অবশ্যই আবেদনকারীকে অস্ট্রেলিয়ার বাইরে অবস্থান করতে হবে।

লাইক দিন, প্রবাসের সব খবর পৌঁছে যাবে আপনার কাছে

স্পন্সর: ভিসা আবেদনের সময় অবশ্যই এমন একজন স্পন্সর থাকতে হবে যিনি অস্ট্রেলিয়াতে অবস্থান করছেন। বাবা- মার ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে সন্তানরাই সব সময় স্পন্সর হয়ে থাকেন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
ভিসা আবেদনের সময় আবেদনকারীকে ভিসা ৬০০ এর একটা ফরম পূরণ করতে হবে। এই ফরম www.border.gov.au ওয়েবসাইটে গিয়ে ডাউনলোড করা যাবে।

সাথে যে কাগজপত্র জমা দিতে হবে:

আবেদনকারীর পাসপোর্টের কপি।
আবেদনকারীর ১ কপি ছবি (৪৫ মিমি বাই ৩৫ মিমি)।
আবেদনকারীর জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট অথবা জাতীয় পরিচয়পত্র।
আবেদনকারীর অথবা স্পন্সরের ব্যাংক স্ট্যাটমেন্ট (সাধারনত ১৫-২৫ লাখ বাংলাদেশি টাকা বা সমমূল্য অস্ট্রেলিয়ান ডলার ব্যাংক একাউন্ট এ থাকতে হবে)।
স্পন্সরের চিঠি বা লেটার অফ ইনভাইটেশন, যেখানে আসার কারণ উল্লেখ করতে হবে। যদি আসার কারণ, কারোর চিকিৎসা বা সন্তানের প্রেগনেন্সি হয়ে থাকে তাহলে সেই সম্পর্কিত কাগজপত্রও সংযুক্ত করতে হবে।
ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া:

উপরের সবগুলো ডকুমেন্টের সত্যায়িত কপি এবং ভিসা ফি একত্রে অনলাইনে (www.border.gov.au) অথবা সরাসরি গুলশানের VFC (visa forwarding centre) এ গিয়ে জমা দিতে হবে।

ভিসা আবেদনের ১ সপ্তাহ থেকে ১ মাসের মধ্যে ই-মেইলেই জানিয়ে দেয়া হবে ভিসা গ্রহণ হয়েছে না বাতিল।

লাইক দিন, প্রবাস কথা’র সাথেই থাকুন

অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক এবং স্থায়ী বাসিন্দাদের জন্য আরো একটু বেশি সুবিধার ব্যবস্থা করেছেন সরকার। তারা তাদের বাবা- মার জন্যে দীর্ঘ মেয়াদী ‘ভিজিটর/ ভ্রমণ ভিসার’ আবেদন করতে পারবেন। এই ভিসাও একইভাবে আবেদন করতে হবে। এই ভিসার মেয়াদ ১২ মাস, ৩ বছর এমনকি ৫ বছর পর্যন্ত করা সম্ভব।

ভিসা আবেদনের সময় অবশ্যই সব ডকুমেন্টগুলোর নামের বানান হুবহু একই কিনা সেই দিকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

সব ডকুমেন্ট ঠিকমতো উপস্থাপন করলে খুব সহজেই অস্ট্রেলিয়ার ভিসা পাওয়া সম্ভব। এর জন্য কোন কন্সালটেন্ট বা এজেন্সির প্রয়োজন পড়ে না। ভিসার প্রয়োজনীয় সব তথ্যই উপরে উল্লেখিত ওয়েবসাইট এ বিস্তারিত রয়েছে। সঠিকভাবে ভিসা আবেদন করুন, তবে মনে রাখবেন কোনভাবেই ভুল তথ্য সরবরাহ করা যাবে না। এক্ষেত্রে, অস্ট্রেলিয় আইন অনেক কঠিন।

জান্নাতুল ফেরদৌস মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
USA Tourist Visa পাবার জন্য কি করবেন


USA Tourist Visa পাবার জন্য কি করবেন
Global Immigration Consultants Ltd·Thursday, November 3, 2016
অনেকেই আমাদের কাছে আসেন USA Tourist ভিসা সংক্রান্ত প্রশ্ন নিয়ে।  হয়তো rejection rate বেশি হবার জন্যই এরকম questions আমাদের কাছে আসে।  আমরা দেখেছি কিছু জিনিস যদি ঠিক থাকে তাহলে টুরিস্ট ভিসা পাওয়া সহজ হয়ে যায় আমাদের সবার জন্যই।  কিছু নিয়ে আমরা discuss করি।
যাহা বলিব সত্য বলিব
অনেক ফার্ম আছে যারা বলে "আমরা টুরিস্ট ভিসা প্রসেস করে থাকি" এবং ওরা আপনাদের কাছে মোটা অংকের টাকা চার্জ করে থাকে আপনাদের কে ডকুমেন্টস দেবার কথা বলে।  Invitation, Bank Statement এ ধরনের সব কিছুর "সাপর্ট" দিয়ে থাকেন তারা।  যখন এ ধরণের কোনো সাপোর্ট নিয়ে আপনারা যাচ্ছেন, মনে রাখতে হবে আপনি crime করছেন।  ভুল, কিংবা মিথ্যা ডকুমেন্টস যে কোনো এম্বেসী তে সাবমিট করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।  আমরা দেখেছি ৩ লক্ষ্য টাকা নিয়েও অনেকে ই ভিসা পেয়েছেন , আবার লক্ষ লক্ষ্য থাকা সত্ত্বেও ভিসা rejected হয়েছে।  আপনাকে যা দেখতে হবে - আপনি ফেরত আসবেন আপনার ভিসা অথবা ভিসিট শেষ হবার পরে।  আপনার যত গুলো স্টেটমেন্ট আছে তাই নিয়ে দাঁড়িয়ে যান এবং অন্য কারো স্টেটমেন্ট না নেয়াই ভালো।  মনে রাখবেন মিনিমাম ৬ মাসের স্টেটমেন্ট থাকতে হবে।
Dress Smart, not formal
মোদ্দা কথা হচ্ছে আপনি যাচ্ছেন একটা দেশের এম্বেসী তে , আপনি টুরিস্ট এবং আপনি ওই দেশে যাবেন আপনার টাকা দিয়ে, ওখানে আপনার টাকা খরচ করে ওই দেশে থাকার জন্য।  এটি কোনো job interview এর জন্য নয়।  এখানে ওরা আপনাকে কোনো favour করছে না, আপনি বরং ওদের দেশের Total GDP তে সাহায্য করছেন, সে যত ছোট হোক না কেন। So dress for what you want to be, not what you are now.
Be confident, you have nothing to lose
Tourist ভিসা কোনো গ্রীন কার্ড নয়, আপনি কেবল কিছু দিন থাকার জন্য একটা ভিসা পাচ্ছেন। ওখানে যাবার পর আপনি কোনো কাজ করতে পারছেন না, কোনো ব্যাঙ্ক একাউন্ট পাবেন না, ওখানে গিয়ে আপনার দেখা বই আর কোনো কিছু হবে না।  এ কারণেই আপনি যদি এ ভিসা না ও পান কেবল আপনার ১৬০০০ টাকা লস হবে, আর কিছুই না।  তাই কনফিডেন্ট থাকুন, প্রশ্ন যদি করে, উত্তর সঠিক এবং সহজে দিন।  যারা আপনাদের সামনে আছেন তারা কেবল একজন ভিসা অফিসার, আর কিছুই নয়।  কনফিডেন্ট থাকা মানে rude হয়ে কথা বলা না - ভদ্র ভাবে সব প্রশ্নের উত্তর দিন।
No Objection Certificate is a must
আপনাকে যদি ফেরত আসতে হয়, তার মানে হচ্ছে প্রতিদিন আপনাকে কোথাও না কোথাও কেউ না কেউ expect করছেন।  সেটা আপনার job হতে পারে বা হতে পারে আপনার Business যা আপনাকে ছাড়া চলতে পারবে না।  তাই আপনাকে অবশ্যই No Objection Certificate রাখতে হবে সাথে।
Know what you will do there
একটি দেশে যাচ্ছেন , স্বভাবতই কিছু না কিছু করার ইচ্ছে থাকবে। গুগল থেকে হোক, অথবা আপনার নিজের Idea থেকে হোক, একটা ছক বেঁধে ফেলুন আপনার ট্যুরিজম এর।  কোথায় যাবেন, কখন যাবেন কি করবেন এটার সম্পর্কে একটা ধারণা করে ফেলুন যাতে যদি কোনো প্রশ্ন করে তাহলে উত্তর দিতে পারবেন।
Try to speak in their language
When in Rome, be like Romans. যদিও আমেরিকান এম্বেসী এখন দোভাষী অফিসার রেখেছে তবু চেষ্টা করবেন ইংরেজি তে কথা বলতে। মনে রাখতে হবে আপনি এমন একটা দেশে যাচ্ছেন যেখানে ইংরেজি হচ্ছে প্রথম ভাষা। কিছু তো আপনাকে জানতেই হবে - এবং ওটাই দেখবেন যে ওখানে যাবার পরে আপনি কথা বার্তা বলতে পারবেন এবং আপনার চলা ফেরা তে কোনো সমস্যা হবে না।

আমরা কি কোনো পয়েন্ট বাদ দিয়েছি ? কমেন্ট করে বলুন আপনার অভিজ্ঞতার কথা।  হয়তো অনেক কেই সাহায্য করবে।
Are you interested to be a content writer ? If you are, just email us your details and few other write-ups at k.sarkar@gicbd.com and we will contact you.
++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
পুঁজি লাগবেনা ১৪টি অনলাইন বিজনেস আইডিয়া

এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে চাকরির আশায় বসে বসে বেকার জীবনযাপন করার কোন মানে নেই। তবে কী করবেন? ব্যবসা? পুঁজি লাগবে না? না, এই অনলাইনের যুগে একটি কম্পিউটার আর ইন্টারনেট কানেকশন থাকেন পুঁজি ছাড়াই আজ থেকেই আপনি ব্যবসায় নামতে পারেন। আসুন দেখে নেওয়া যাক এমন ১৪টি অনলাইন বিজনেস আইডিয়া।

০১. এসইও কনসালটেন্ট : আপনি কি সার্চ ইঞ্জিনের বিষয়ে অভিজ্ঞ? মানে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন সম্পর্কে জানেন; কিন্তু কোথাও কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন না। প্রতিষ্ঠানের আশায় বসে না থেকে অনলাইনেই শুরু করুন এসইও সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া। অনেক প্রতিষ্ঠান পাবেন যারা আপনার পরামর্শ নেওয়ার জন্য বসে আছে। বিভিন্ন ফ্রিল্যান্স সাইটে এমন কাজ পাবেন। না হলে সোজা গুগল সার্চ দিন।

০২. বিজনেস প্রশিক্ষণ : আপনার ব্যবসা সম্পর্কে ভাল ধারণা থাকতেই পারে। কিন্তু পয়সার অভাবে নিজের স্বপ্ন অনুযায়ী একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে পারছেন না। আপনার এই অভিজ্ঞতা বসে বসে নষ্ট করার কোন মানে নেই। অনলাইনে এমন অনেককে পাবেন যারা নতুন ব্যবসা শুরু করতে চাইছে। লিংকডইনে যান, সেখানে আপনি ব্যবসা সংক্রান্ত আর্টক্যাল লিখতে পারবেন। এর দ্বারা সেখানে আপনি অনেক ক্লায়েন্ট পাবেন। তাদের সদুপদেশ দিয়ে নিজের মেধা এবং অভিজ্ঞতা ঝালিয়ে নিতে পারবেন। সেই সঙ্গে টু-পাইস ইনকাম তো আছেই।

০৩. স্পেশালাইজড রিটেইলার : বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও অনলাইনে পণ্য কেনাবেচা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এখন দেশের সব বড় শহরগুলোতেই স্পেশালাইজড শপ বা সুপারশপ আছে। এদের মধ্যে অনেক ছোট বড় প্রতিষ্ঠান আছে যারা অনলাইনে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের প্রচার এবং বিজনেস শুরু করতে ইচ্ছুক। সেই সব প্রতিষ্ঠানের কোন একটির সঙ্গে চুক্তি করে আপনি তাদের পণ্যসম্ভার দিয়ে একটি অনলাইন শপ চালু করে ফেলতে পারেন। ঘরে বসে হয়ে যান রিটেইলার শপার।

০৪. সোশ্যাল মিডিয়া পরামর্শক : তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে সোশ্যাল সাইটগুলো চরম উত্কর্ষ অর্জন করেছে। জীবনের সব সমস্যার সমাধান যেন হয়ে উঠছে ফেসবুকের মত মাধ্যমগুলো। নিত্য নতুন ফিচারের পাশাপাশি বাড়ছে সোশ্যাল সাইট হ্যাক করে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করার মত ঘটনা। আপনার যদি সোশ্যাল সাইটগুলোর ব্যবহারবিধি, নিরাপত্তাসহ ফ্রেন্ড-ফলোয়ার বৃদ্ধির বিভিন্ন ট্রিকস জানা থাকে হবে আপনি হয়ে যেতে পারেন সোশ্যাল মিডিয়া কনসাল্টেন্ট। এমনটা করলে অনেক ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাজ পেতে পারেন।

০৫. ওয়েব ডিজাইন : বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত বিজনেস এটা। এখন একটি ছোটখাট প্রতিষ্ঠানও চিন্তা করে তাদের একটা ওয়েবসাইট থাকা দরকার। আপনার যদি ওয়েব ডিজাইন জানা থাকে তবে বসে থাকার কোন মানে নেই। ফ্রিল্যান্স সাইটগুলোতে নিজের পোর্টফোলিও পোস্ট করুন। একটি নমুনা ওয়েবসাইটের লিংক দিয়ে রাখুন। বাজারদর বিবেচনা করে সাশ্রয়ী পারিশ্রমিক ঘোষণা করুন। আপনাকে আর ঠেকায় কে?

০৬. আবেদনপত্র/কভার লেটার লেখা : আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে অনেক শিক্ষিত মানুষ সুন্দর করে একটি চাকরির আবেদনপত্র লিখতে জানে না। কিন্তু চাকরিক্ষেত্রে একটি সুন্দর গ্রহণযোগ্য আবেদনপত্র কিংবা কভার লেটার অন্যদের সঙ্গে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। আপনার এই বিষয়ে অভিজ্ঞতা থাকলে লিংকডইন কিংবা সোশ্যাল সাইটগুলোয় এই বিষয়ে ক্লায়েন্ট খুঁজতে পারেন। ক্লায়েন্ট যে পাবেন এতে কোন সন্দেহ নেই।

০৭. টাস্ক ম্যানেজার/সহকারী : আপনার যদি ভাল অর্গানাইজিং দক্ষতা থাকে তবে আপনি এই ব্যবসার উপযুক্ত। আপনি কি অনলাইনের বিভিন্ন সমস্যার দ্রুত সমাধান দিতে পারেন? তবে আপনার এই দক্ষতা একজন ব্যাক্তিগত সহকারী কিংবা অনলাইন টাস্ক ম্যানেজার হিসেবে কাজে লাগাতে পারেন। TaskRabbit কিংবা Zirtual এর মত কোম্পানীগুলো টাকার বিনিময়ে আপনার মত মানুষকেই খুঁজে থাকে। এসব সাইটে আপনি ডাটা রিসার্চ, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট সহ বিভিন্ন কাজে সহকারীর দায়িত্ব পালন করতে পারেন।

০৮. প্রফেশনাল ফ্রিল্যন্সার : ফ্রিল্যান্সিং বলতে সাধারণত অবসর সময়ের কাজকেই আমরা বুঝে থাকি। কিন্তু সময়ের পাশাপাশি ধারণাও পাল্টে গেছে। এখন প্রচুর বেকার তরুণ-তরুণী ফ্রিল্যান্সিংকে মূল পেশা হিসেবে গ্রহণ করছেন। আপনি চাইলে পার্টটাইম কাজও করতে পারেন। বেকার বসে না থেকে আজই যুক্ত হোন ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে।

০৯. মার্কেটিং : আপনি যদি আমাজানের মত সাইটগুলোতে পণ্যের রিভিউ লেখায় অভ্যস্ত থাকেন তবে এখনই তা বন্ধ করুন। কারণ বিনামূল্যে কেন আপনি কোন পণ্যের মার্কেটিং করবেন? ওয়ার্ড অব মাউথ-এর মত অনেক কোম্পানী আছে যারা নিজেদের প্রোডাক্ট অনলাইনে প্রমোট করার জন্য আপনাকে পয়সা দেবে। আপনার যদি প্রচুর ফলোয়ার সমৃদ্ধ সাইট কিংবা সোশ্যাল অ্যাকাউন্ট থাকে তবে তো সোনায় সোহাগা। আজই লেগে যান কাজে।

১০. ই-বুক লেখক : আপনার লেখালেখির হাত, ভাষার দক্ষতা এবং টাইপিং স্পীড যদি ভাল থাকে তবে আপনি অনায়াসে একজন ই-বুক রাইটার হতে পারেন। এটি অনেক সহজ একটা কাজ। ই-বুকের চাহিদা এত পরিমাণে বাড়ছে যে ই-বুক রাইটার খুঁজতে পাবলিকেশন্সগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। অনলাইনে এমন গ্রাহক খুঁজে নিতে পারেন সহজেই।

১১. প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান : অনেক ছোটখাট কোম্পানী আছে যাদের কোন আইটি স্পেশালিস্ট নেই। তাদের প্রযুক্তিগত কোন সমস্যা হলে বাইরের লোক ডাকতে হয়। আপনি এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে অনলাইনে বসেই শুরু করতে পারেন প্রযুক্তগত পরামর্শ প্রদান। সমস্যা হলে তারা আপনাকে জানাবে এবং আপনি ঘরে বসেই সমাধান দিয়ে দেবেন। আর কী চাই?

১২. ভার্চুয়াল চালান : শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এই কাজটি আপনি নিজেই অহরহ করে থাকেন ব্যাংক কিংবা কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। আপনার একটি নিজস্ব ওয়েবসাইট থাকলে সেখানে গুগল চেকআউটের মত ট্রানজেকশন হ্যান্ডল করতে পারেন। বিভিন্ন ব্র্যান্ড তাদের অনলাইন চালানসমূহ অর্গানাইজ করার জন্য আপনাকে খুঁজে নেবে। আপনি তাদের সাইট থেকে পণ্যের ছবি বিবরণ কপি করে নিজের ওয়েবসাইটে আনুন। তারপর নির্দিষ্ট আর্থিক চুক্তির বিনিময়ে নেমে পড়ুন পণ্য বিক্রয়ে।

১৩. হস্তশিল্প বিক্রেতা : অটোমেটিক মেশিনের যুগে হস্তশিল্পের কদর মোটেই কমেনি। বরং প্রচারের অভাবে এই প্রাচীণ শিল্প মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছে না। আপনি এমন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারেন। তাদের পণ্য আপনি অনলাইনে বিক্রি করবেন। গ্রাহকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট সার্ভিস চার্জ নিয়ে আপনি কুরিয়ারের মাধ্যমে পণ্য পৌঁছে দিতে পারেন তাদের কাছে।

১৪. অ্যাপ ডেভলপার : স্মার্টফোনের যুগে অ্যাপের ছড়াছড়ি। মানুষ এখন কম্পিউটারে বসে সাইট ব্রাউজ করার চাইতে স্মার্টফোন অ্যাপেই কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এখন অ্যাপ ডেভলপিংয়ে আগ্রহী। আপনি যদি কোডিং সম্পর্কে ভাল জেনে থাকেন তবে লেগে পড়ুন অ্যাপ ডেভলপিংয়ে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতে পারেন। এছাড়া বিভিন্ন সফওয়্যার ডেভলপার কোম্পানীও অনলাইনে ডেভলপার চায়। প্রথমে নিজে একটি আকর্ষণীয় অ্যাপ তৈরি করে নমুনা হিসেবে দেখান এবং যৌক্তিক পারিশ্রমিক দাবি করুন। আপনার কাজ পাওয়া নিশ্চিত